রাজা ইলিশ, চাঁদপুর অনলাইন পেজের প্রতারণা!
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ২০:০১
রাজা ইলিশ, চাঁদপুর অনলাইন পেজের প্রতারণা!
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজা ইলিশ, চাঁদপুর নামে একটি অনলাইন পেজ থেকে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করা হয়েছে। এতে এক ভুক্তভোগী ১০ হাজার টাকার বেশি প্রতারিত হয়েছেন।


জানা যায়, অনলাইন এই পেজটিতে বিভিন্ন লোভনীয় ক্যাপশন লিখে এবং নানা ধরণের মাছের ছবি দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা হয়। রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা নূরীয়া পারভীন নামে এক ভুক্তভোগী এই পেজটিতে মাছের অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছেন।


নূরীয়া পারভীন বিবার্তাকে বলেন, চাঁদপুরের নদীর মাছ কিনতে অনলাইন এই পেজটিতে অর্ডার করেছিলাম ৮ অক্টোবর, রবিবার। সবকিছু কনফার্ম করার পর আজ ৯ অক্টোবর মাছ ডেলিভারি দেওয়ার কথা। কিন্তু নানা ফাঁদ তৈরি করে মাছ ডেলিভারি না দিয়েই আমার কাছ থেকে পুরো টাকা বাগিয়ে নিয়েছে।


তিনি আরো বলেন, আমি ১ কেজি গলদা চিংড়ি, রূপচাঁদা ১ কেজি, আইড় মাছ ১ কেজি, ১০০০ গ্রামের ইলিশ ২ পিস, ৯০০ গ্রামের ইলিশ ২ পিস, ভালো ডিম ১ কেজি, ২৫০০ গ্রাম ইলিশ ১ পিস অর্ডার করেছিলাম। যার মোট মূল্য ১০ হাজার ২৫০ টাকা। এরমধ্যে তাদের শর্ত মতে ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৩০০ টাকা বিকাশে পে করি। যার রসিদও আমাকে পাঠানো হয়েছে অনলাইনে। তাদের সাথে কথা হয়েছিল মাছ পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়া যাবে- তবে সেক্ষেত্রে ডেলিভারি বয়কে চার্জ দিয়ে দিতে হবে। এই সবকিছুর পর আজ মাছ ডেলিভারি দিয়ে বাকী টাকা নেওয়ার কথা। কিন্তু সকালে ডেলিভারি বয় আমাকে ফোন দিয়ে জানায় সে রমনার আশপাশে আছে, কিছুক্ষণ পরে বাসার দিকে এসে মাছ দিয়ে যাবে। আর তার জন্য একটা কোড নম্বর লাগবে, সেটা যেখান থেকে অর্ডার করা হয়েছে- তারা দিতে পারবে।


এই ভুক্তভোগী বলেন, ডেলিভারি বয়ের কথা শুনে আমি যার সাথে কথা বলে অর্ডার করেছিলাম সেখানে যোগাযোগ করলাম। কিন্তু সেখান থেকে বলা হলো, তাদের দায়িত্বে পরিবর্তন এসেছে। কাজেই নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরো পেমেন্ট না করলে কোড নম্বর দেওয়া যাবে না। এরপর আমাকে বাকি টাকা পে করতে বলা হলো। আমি শুরুতেই সন্দিহান থাকলেও পরে চিন্তা করলাম যেহেতু সকালে ডেলিভারি বয়ের সাথেও কথা হয়েছে তাই হয়তো পেয়েই যাবো। তাই বাকি ৬৯৫০ টাকাও বিকাশে পে করলাম। এরই মাঝে ডেলিভারি বয়ের সাথে যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন জায়গায় ডেলিভারির কথা জানায়। আমার কোড নম্বর পেলে আমাকেও দিয়ে যাবে। এদিকে পুরো পেমেন্ট করার পর কোড নম্বর না আসায় আমি তাদের সাথে আবার যোগাযোগ করলাম- কিন্তু সেখান থেকে আরেক ফাঁদ তৈরি করা হলো। আমাকে বলা হলো আমি বিকাশে খরচসহ দেইনি। পরে সেটাও দিয়ে দেওয়া হলে আবার বলা হলো তাদের সিস্টেমের জন্য আরও ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। এটা শোনার পর আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে, তারা প্রতারক। এরপর আমি রাগ করে বললাম আপনারা আর কত জনের সাথে এই ধরণের প্রতারণা করেছেন। আমাকে উত্তেজিত হতে দেখে ফোন কেটে দেয়।


তিনি বলেন, এরপর আমি বারবার ফোন দিলে প্রথমে কিছুক্ষণ রিং হয়েছে। একটা পর্যায়ে ফোনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডেলিভারি বয়কে কল দিলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।


ভুক্তভোগীকে দেওয়া প্রতারক চক্রের সেই রসিদে দেখা যায়, রাজা ইলিশ, চাঁদপুুরের ঠিকানায় লেখা হয়েছে গলি ২০৩, স্টেশন বাজার, চাঁদপুর। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভিন্ন কথা। প্রতারক চক্রের দেওয়া ঠিকানায় চাঁদপুরে এমন কোন দোকানের অস্তিত্ব নেই। এদিকে তাদের নম্বরগুলো খুলনা জেলার দৌলতপুরের লোকেশনে দেখা যাচ্ছে।


ভুক্তভোগীর যোগাযোগ করা ০১৮৫০৩৮০৮২২ নম্বরে কল দেওয়া প্রতারক চক্রের একজন রিসিভ করে। তার নাম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিবার্তাকে মোরশেদুর রহমান বলে জানান। এরপর ভুক্তভোগী টাকা বিকাশে পে করার পর মাছ না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি বিকাশে টাকা দিয়েছেন কিন্তু খরচ না দেওয়ায় মাছ ডেলিভারি পাননি। তিনি খরচসহ দিয়েছেন প্রতিবেদকের এমন জিজ্ঞাসায় সে ফোন রেখে দেন। তারপর থেকে নম্বরটি বন্ধ। এদিকে প্রতারক চক্রের আরেক নম্বর ০১৮৮৭৮৪৬৬২৫ তে কল করা হলে তাও বন্ধ পাওয়া যায়।


বিবার্তা/রাসেল/রোমেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com