
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মাঠে রয়েছেন পাঁচজন প্রার্থী। আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচন সামনে রেখে তারা দিনরাত নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তীব্র তাপদাহের মধ্যে অসহ্য গরম উপেক্ষা করে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে নিজেদের জন্য ভোট চাইছেন প্রার্থীরা।
জানা গেছে, নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগের আর একজন স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী। তাদের মধ্যে কাউখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিঞা মনু ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রভাবশালী এই প্রার্থী রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন এবং অল্প ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। পরে তিনি সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু’র জাতীয় পার্টি জেপি’তে যোগ দিয়ে ৫ম উপজেলা নির্বাচনে বাই সাইকেল প্রতীক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিগত সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করে বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের সাথে যোগ দেন।
আরেক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন। ৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েও তিনি বিপুল ভোট পেয়েছিলেন। তার সেই ভোট ব্যাংক কাজে লাগানোর পাশাপাশি দলীয় কর্মী-সমর্থদের সংগঠিত করে মাঠে নামিয়ে ভোটের খেলায় তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ভোটাররা মত দিয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. আব্দুস শহীদ মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি নির্বাচনের মাঠে পুরাতন- ইতঃপূর্বে কয়েকবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি তৃতীয় ও চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোট পেয়ে ছিলেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনি মাঠে আছেন। নির্বাচনি মাঠে তিনি নতুন খেলোয়াড় হলেও ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। বিশেষ করে যুবক এবং প্রবীণদের মধ্যে তাকে নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একজন সুবক্তা হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে সমর্থ হয়েছেন। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। এই ভোট ব্যাংকের বিশ্বজিৎ পালের দিকে সমর্থন রয়েছে বলে স্থানীয় ভোটারদের ধারণা।
এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদুল ইসলাম খান দোয়াত কলম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বয়সে প্রবীণ এই প্রার্থী এ পর্যন্ত উপজেলাব্যাপী তেমন কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও তার নিজ এলাকায় বেশ এগিয়ে আছেন বলে অনেকের ধারণা।
নির্বাচনি পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলে এবং মানুষ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে আসলে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের লড়াইতে কোনো প্রার্থীর একক আধিপত্য থাকবে না বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। কোনো অঘটন না ঘটলে শেষ মুহূর্তের লড়াইয়ে তিন প্রার্থী মূল আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করছেন উপজেলাবাসী।
এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৃদুল আহম্মেদ (চশমা), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল বরণ ঘোষ (তালা), জাতীয় পার্টি (জেপি) সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ছাত্র সমাজের সভাপতি মো. শামীম হোসেন (বাই-সাইকেল) যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম সমদ্দার (টিউবওয়েল), মো. মাছুম বিল্লাহ (বই)। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে- ফাতেমা ইয়াসমিন (হাঁস), জাতীয় পার্টি (জেপি) সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মহিলা পার্টি-জেপি’র সাধারণ সম্পাদক সীমা আক্তার (বাই-সাইকেল)।
বিবার্তা/রবিন/রোমেল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]