
রাজধানীতে রাস্তা পার হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষে মেহেদী হাসান নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মেহেদী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিল। ভাটারার নুরের চালা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত সে। মেহেদী এ বছর ভাটারার সোলমাইদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে। তার বাবা আবু হানিফ বাসাবাড়িতে ডেকোরেশনের কাজ করেন এবং মা লিপি শিকদার উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক। দুই ভাইয়ের মধ্যে মেহেদী বড়।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ গতকাল আনন্দ শোভাযাত্রা আয়োজন করে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নেতাকর্মী এতে অংশ নেন। বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২-এ শেষ হয়। এর পর নেতাকর্মীরা যে যার মতো বাড়ি ফিরছিলেন। নুরের চালা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের শতাধিক নেতাকর্মী ধানমন্ডি ৩২ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হয়ে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিলেন। আরও বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী একই সড়ক হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাদের কেউ ছিলেন পিকআপ ভ্যানে, কেউ বাসে এবং কেউ হাঁটছিলেন।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে নুরের চালা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেক গ্রুপের নেতাকর্মীকে বহন করা পিকআপ আটকা পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা গাড়ি থেকে নেমে তেড়ে যান। তাদের গাড়ি থামিয়ে কেন নুরের চালার নেতাকর্মীরা আগে রাস্তা পার হচ্ছেন– এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পিকআপ থেকে নেমে দুই যুবক মেহেদীর বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মেহেদীর মামা চয়ন মিয়া উত্তর সিটির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড (নুরের চালা এলাকা) স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। মেহেদী তাঁর সঙ্গেই শোভাযাত্রায় এসেছিলেন। তারা একসঙ্গে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন।
চয়ন মিয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। পিকআপ থেকে নেমে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে একজনকে মারতে যাচ্ছিল দু’জন। এ সময় মেহেদী বাধা দিলে তাকে আঘাত করে।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি মুহ. আহাদ আলী বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি শেষে দুই পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুই পক্ষের মধ্যে দুই দফায় মারামারি হয়েছে। তখন মেহেদী হাসান নামে এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]