অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ায় কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩, ২২:১৭
অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ায় কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

কলেজের অধ্যক্ষ পদে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগে রংপুর সমাজ কল্যাণ বিদ্যাবিধী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নাহিদ ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


মঙ্গলবার (১৬ মে) দুদকের রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. হোসাইন শরীফ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে বিবার্তাকে জানায় দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।


মামলায় এজাহার অনুয়ায়ী, সমাজকল্যাণ বিদ্যাবিথী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নাহিদ ইয়াসমিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় গভর্নিং বডির সদস্য থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভের জন্য আবেদন করেন। সাজানো একটি নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ লাভ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাহিদ ইয়াসমিন ১৯৭৭ সালে রাজশাহী বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে, ১৯৭৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে, ১৯৮২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে স্নাতক পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে এবং ১৯৮৩ সালে একই বিভাগ থেকে এমএ পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। অর্থাৎ ১৯৯৫ সালের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী তিনি অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের নিমিত্তে আবেদনের জন্য উপযুক্ত ছিলেন না।


দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রংপুরের অনুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও সাক্ষীর বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নাহিদ ইয়াসমিন ১৯৮৭ সালের ৭ জুলাই ওই প্রতিষ্ঠানে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৮ সালের ১ মার্চ এমপিওভুক্ত হন। তিনি ১৯৯৫ সালে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ওই পদে দায়িত্ব পালনকালে সাবেক অধ্যক্ষের অবসরজনিত কারণে গত ২০০১ সালের ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে স্থানীয় একটি পত্রিকায় ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা কী হবে তা ইচ্ছাকৃতভাবে উল্লেখ করা হয়নি।


এমপিওভুক্ত বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্তে বিদ্যমান নীতিমালা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য জনবল কাঠামো মোতাবেক অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণির অনার্সসহ দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। সব পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে। জনবল কাঠামো ১৯৯৫ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে দুটি তৃতীয় শ্রেণি/বিভাগ গ্রহণযোগ্য ছিল না। যেহেতু নাহিদ ইয়াসমিনের অধ্যক্ষ নিয়োগকালে দুটি তৃতীয় বিভাগ ছিল, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে।


পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, সমাজ কল্যাণ বিদ্যাবিথী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে যে ছয়জন প্রার্থী অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে আবেদন করেন তাদের পাঁচজনই ওই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপর একজন শশাঙ্ক শেখর রায়, মাহিগঞ্জ কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।



বিবার্তা/সানজিদা/এনএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com