শিরোনাম
মৌসুমের শেষে বরগুনার বাজারে বড় ইলিশ
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:২৮
মৌসুমের শেষে বরগুনার বাজারে বড় ইলিশ
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

এ বছর ইলিশ মৌসুমের শেষ সময়ে বরগুনার স্থানীয় বাজারে গত বছরের তুলনায় বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বড় ইলিশের দাম খুব বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরেই তা রয়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত মানুষকে মাঝারি সাইজের ইলিশ কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। নিম্নআয়ের মানুষের ভরসা এখনো ছোট ইলিশ।


বরগুনা মৎস্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্ত মাহবুবুর রহমান জানান, সাগরের তুলনায় নদীর মাছ সুস্বাদু হওয়াতে স্থানীয় বাজারে তার চাহিদা বেশি। আর সমুদ্র থেকে আহরিত মাছ চলে যায় রফতানি হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ দেশের বাইরে। বরগুনার পায়রা ও বিষখালী নদীর মাছই সাধারণত স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মেটায়। মৌসুমের শেষ দিকে ইলিশের দেখা মেলায় হাসি ফুটেছে এখানকার জেলেদের মুখে। জেলার বিভিন্ন মৎস্য আড়তগুলোতে উৎসবের আমেজ। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতেই মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে মৎস্য বিভাগ।


জুন থেকে সেপ্টেম্বর এ চার মাস ইলিশের মৌসুম। তবে চলতি বছর উপকূলীয় নদ-নদীগুলোতে ইলিশ ছিল দুর্লভ। মৌসুমের প্রথম দিকে ইলিশ একেবারে কম থাকলেও, গত ১৫ দিন জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। এসব ইলিশের আকারও বড়। ফলে জেলেদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করছে।


মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা জগদীশ বসু জানান, আগস্ট মাসে সাগরে ইলিশ পাওয়া গেলেও নদীতে কাক্ষিত ইলিশ পাওয়া যায়নি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মাঝামাঝি নদীতে পানির উচ্চতা বাড়লে সাগর থেকে ইলিশ নদীতে আসতে শুরু করেছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে ইলিশের মৌসুমেরও কিছু পরিবর্তন হয়েছে, তাই চলতি বছর নদীতে ইলিশ আসতে দেরি হয়েছে।


বড় সাইজের এবং বেশি ইলিশ ধরা পড়লেও মাছ বাজারের ক্রেতারা জানান, ‘দাম কমেনি’! পাঁচশ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি হিসেবে। ৯০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজির উপরের সাইজ হলেই দেড় হাজার টাকা। দেড় কেজি ওজন হলে এক লাফে দ্বিগুণ ।অর্থাৎ তিন হাজার টাকা প্রতি কেজিতে পৌঁছে যাচ্ছে। জাটকা বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৪০০ টাকা কেজিতে।


বছরে প্রধানত তিনবার ইলিশ জেলেরা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হন। মার্চ-এপ্রিল জাটকা মৌসুম। ইলিশকে বড় হতে দিতে হবে। কড়া আইন, নদীতে জাল ফেলা যাবে না। নিষেধাজ্ঞার এ দুই মাস পার হলে জেলেরা মোটামুটি উৎসবের আমেজে নদী-সমুদ্রে জাল ফেলেন। ইলিশ মেলে; অথবা মেলে না। মে-জুলাইয়ে সাধারণত ইলিশ ততটা পড়ে না। মূল সময়টা সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। পহেলা মে ইলিশ ধরার উৎসবে নেমে মাত্র কুড়ি দিনের মাথায়, অর্থাৎ ২০ মে ইলিশ ধরায় আবার নিষেধাজ্ঞা। চলে টানা ৬৫দিন। পঁয়ষট্টি দিনের এ আইনটা আগেও ছিল। কিন্তু এতটা কড়াকড়ি ছিল না। এবার সরকার এ আইনটি বাস্তবায়নে কঠোর হয়। তবে এ সময়টা সমুদ্রে মাছধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে; নদীতে নয়। এরপর আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মোটামুটি ইলিশ পাওয়া বা না পাওয়ার মধ্যে কেটে যায়। এরমধ্যেই আবার অক্টোবরের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রজনন মৌসুমের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়।


তাই এখনই সময় ইলিশের। মাছের রাজার দখলে মাছ বাজার। পুবাল বাতাস আর ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টিতে ইলিশ পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে। পুবাল বাতাসে জোয়ারের পানি বাড়ে, জেলেদের জালে ইলিশও বাড়ে। এ সময়ে উপকূলীয় মানুষের খাদ্যতালিকা সম্মৃদ্ধ করে এ ইলিশ। ছোট হোক, বড় হোক; হাত বাড়ালেই ইলিশ। যেটা অন্য সময় ভাবাই যায় না।


বিবার্তা/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com