বিপিএলে এর আগের চারটি আসরের মধ্যে তিনটিতে শিরোপা জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুর্জা। তার নেতৃত্বে ঢাকা দুইবার এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একবার শিরোপা ঘরে তুলেছে। ম্যাশের নেতৃত্বে এবার প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতলো রংপুর রাইডার্স। অবশ্য এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব ক্রিস গেইলের। তার ঝড়ো শতক এবং বোলারদের আঁটসাটো বোলিংয়ে ঢাকা ডাইনামাইটসকে ৫৭ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স।
এদিন টসে জিতে রংপুরকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেটে ২০৬ রানের পাহাড় গড়ে রংপুর। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান করতে সমর্থ হয় ঢাকা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্কোর বোর্ডে কোনো রান যোগ না হতেই ফিরে যান ওপেনার মেহেদী মারুফ। মাশরাফির করা ইনিংসের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। স্কোর বোর্ডে ১ রান যোগ হতেই সোহাগ গাজীর ঘূর্ণিতে স্কুপ করতে গিয়ে নাহিদুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন জো ডেনলি (০)।
এভিন লুইসের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল ঢাকা। তিনিও ১টি ছক্কা এবং ২ বাউন্ডারির সাহায্যে ১৫ (৯) রান করার পরই সোহাগ গাজীর বলে ক্যাচ দিয়ে মাশরাফির হাতে ধরা পড়েন। অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরেন মাশরাফি। কাইরণ পোলার্ড বেশ কয়েকটি ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং করে জিতিয়েছেন ঢাকাকে। কিন্তু তিনিও এ ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি। ৫ বলে ৫ রান করার পর রুবেলের বাউন্সি বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং লেগে ক্রিস গেইলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
জুটি বাধার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান এবং জহুরুল ইসলাম। দু’জনের ৪২ রানের জুটির ওপর প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিল ঢাকা। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে সুইপ করতে যান সাকিব আল হাসান। কিন্তু ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। বল সোজা গিয়ে ভেঙে দেয় তার লেগ স্ট্যাম্প। সঙ্গে সঙ্গে ‘ভাইপার’ ড্যান্সে মেতে ওঠেন নাজমুল অপু। ১৬ বলে ২৬ রান করে আউট হয়ে যান ঢাকার অধিনায়ক। ৩টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে।
রবি বোপারার বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ঢাকার আরেক নির্ভরতা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শহীদ আফ্রিদিকে আজ মাঠে নামানো হয় শেষ দিকে যেন ঝড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য। তিনিও আজ যোগ দিলেন ব্যর্থতার মিছিলে। মাঠে নামার পর একটি ছক্কা মেরেছিলেন ঠিক। কিন্তু ৫ বলে ৮ রান করে আউট হন নাজমুল অপুর বলে। রুবেলে হোসেন ক্যাচটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে আবারো ‘ভাইপার’ ড্যান্সে মেতে ওঠেন নাজমুল অপু।
অষ্টম উইকেট জুটিতে সুনিল নারিন আর জহুরুল ইসলাম অমি মিলে ৪২ রানের জুটি গড়েন। ওপেনিংয়ে নেমে নারিন যেভাবে তাণ্ডব তুলতে পারেন, নয় নম্বরে নেমে সেভাবে তুলতে পারলেন না। ১৫ বলে ১৪ রান করে অবশেষে শ্রীলঙ্কান ইসুরু উদানার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে।
রংপুরের হয়ে নাজমুল ইসলাম অপু, সোহাগ গাজী ও উদানা ২টি করে উইকেট নেন। মাশরাফি, রুবেল হোসেন ও রবি বোপারা নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মিরপুরে রীতিমতো ঝড় তুলেন ক্রিস গেইল। এলিমিনেটরির ম্যাচে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারের ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ৩ রান। কিন্তু তিনি যে বড় ম্যাচের খেলোয়ার সেটা আবারো প্রমাণ করলেন ফাইনালে ৬৯ বলে অপরাজিত ১৪৬ রান করে। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাককলাম। তিনি ৪৩ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
অথচ ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসের উইকেট তুলে নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু এরপর ঢাকার কোনো বোলারই জ্বলে উঠতে পারেনি। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান করে রংপুর।
বিবার্তা/সোহাগ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]