উৎসবের শহরজুড়ে সাকরাইনের আমেজ!
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৮
উৎসবের শহরজুড়ে সাকরাইনের আমেজ!
রুদ্র দেব নাথ, (জবি প্রতিনিধি)
প্রিন্ট অ-অ+

উৎসবের শহর হিসেবে বেশ নাম ডাক রয়েছে পুরান ঢাকার। এই শহরে যে কয়টি উৎসব বেশ ধুমধামের মধ্যে পালন করা হয়, তার মধ্যে সাকরাইন অন্যতম। ঘুড়ি উৎসব নামে বহুল প্রচলিত এই উৎসবটি প্রতিবছর ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি মহা ধুমধামের সাথেই পালন করা হয়। বছরের এ সময়টাতে রং-বেরঙের বাতি, ঘুড়ি, ঝালরের সাজে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের মাঝে পুরান ঢাকা ছড়ায় নিজের লাবণ্য।


উৎপত্তিগত দিক থেকে সংস্কৃত শব্দ সংক্রান্তি ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন শব্দের রূপ নিয়েছে। বাংলা পৌষ মাসের শেষ ও মাঘ মাসের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে পুরান ঢাকাবাসী। দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি আর রঙ-বেরঙের ফানুস উড়িয়ে সাকরাইন উৎসব পালন করে পুরান ঢাকাবাসী।


সাকরাইনকে সামনে নিয়ে পুরান ঢাকার প্রত্যেকটি ওলিগলিতে সাজ সাজ রব উঠে। ঢাকার দয়াগঞ্জ, মুরগিটোলা, কাগজিটোলা, সূত্রাপুর, বাংলাবাজার, ধূপখোলা মাঠ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সদরঘাট, কোর্টকাচারি এলাকায় সারাইনের এ আমেজ খুব ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যায়। সাকরাইন উপলক্ষ্যে শাঁখারীবাজার ও তাঁতিবাজার এলাকার দোকানগুলোতে চলছে ঘুড়ি, নাটাই, সুতা বিক্রির উৎসব। ছাদে ছাদে লেগেছে সুতা মাঞ্জা দেওয়ার ও রোদে সুতা শুকানোর ধুম।


কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী এমনকি বয়োবৃদ্ধরাও এ উৎসবে শামিল হন। দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় ডিজেপার্টিসহ বিভিন্ন আয়োজনে সারারাত আনন্দে মেতে ওঠে পুরান ঢাকাবাসী।


সাকরাইনের মূল আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো। আকাশের সর্বোচ্চ উচ্চতা ধরতে নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আর তাই প্রয়োজন দক্ষ হাতের সঠিক মাপে তৈরি করা ঘুড়ি। এইসব ঘুড়ি ও সুতা তৈরিতে রয়েছে শৈল্পিক নিদর্শন। এজন্য বাহারি নাম ও ডিজাইনের ঘুড়ি গুলোর মধ্যে লেজলম্বা, চারভুয়াদার, গোয়াদার, চোকদার, মাসদার, গরুদান, পানদার, লেনঠনদার, গায়েল অন্যতম।


এসব ঘুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় নানান রঙের কাগজ, পলিব্যাগ ও বাঁশের অংশবিশেষ। ঘুড়ি উড়াতে রং-বেরঙের নাটাই এবং ঘুড়িতে সংযোগ করা হয় বাহারি রঙের সুতা। সেসব সুতার মধ্যে রক সুতা, ডাবল ড্রাগন, সম্রাট, ডাবল ব্লেট, মানজা, কিংকোবরা, ক্লাক ডেবিল, ব্লাক গান, ডাবল গান, বর্ধমান, লালগান ও টাইগার অন্যতম।


বাংলাদেশের বাইরে ভারতেও বেশ ধুম ধামের সাথে সাকরাইন পালন করা হয়। মূলত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে, মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত সিলিগুড়ি পৌরসভা এলাকায় সাকরাইন পালনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।


বিবার্তা/রুদ্র/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com