জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত নয় বিএনপি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ২১:৫৪
জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত নয় বিএনপি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। তবে এটিকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত নয় বিএনপি।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জনগণের সার্বভৌম এখতিয়ারের ভিত্তিতেই আমরা এই ঘোষণাপত্রকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছি। সেটা আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি। এর চেয়ে বড় জাতীয় সম্মতি আর নেই। এটা আইনের ঊর্ধ্বে। এটা জনগণের অভিপ্রায়। এটা সার্বভৌম ব্যাপারের কাছাকাছি হয়ে গেছে।’


৩১ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২৩তম দিনের সংলাপের বিরতিতে সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, সংবিধান সংশোধনে সংসদের উচ্চকক্ষের ক্ষমতা চায় না বিএনপি। নিম্নকক্ষেই সংবিধান সংশোধন হবে।


সালাহউদ্দিন বলেন, উচ্চকক্ষ আইন পর্যালোচনা ও সুপারিশের কাজ করবে। কিন্তু কোনোভাবেই তারা সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার পাবে না। উচ্চকক্ষের সদস্যরা সরাসরি নির্বাচিত না হওয়ায় তাদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের চিন্তা গণতান্ত্রিক চেতনাবিরোধী। সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার কেবল সার্বভৌম জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের হাতে থাকা উচিত।


২২ দিনের সংলাপের কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, ভোটের অনুপাতে (পিআর) ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষে দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। বিএনপি এতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) দিয়েছে।


সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্যরা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত। তারা যদি সংবিধান সংশোধনীর বিলে অংশ নিতে পারেন, উচ্চকক্ষের সদস্যরা কেন নয়- এ প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেছেন, নারী সদস্যরা সংসদের অংশ।


তাহলে আইন পাসের জন্য কেন উচ্চকক্ষে পাঠানো হবে- প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেছেন, বিএনপি প্রস্তাব করেছেন, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের যৌথভাবে পাস হওয়া আইনের মধ্য দিয়ে একটি অংশীদারিত্বের প্রক্রিয়া গড়ে উঠুক। উচ্চ কক্ষ আইন পর্যালোচনা করবে, সুপারিশ করতে পারবে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে নিম্নকক্ষে। তবে উচ্চকক্ষের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।


বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা দেখছি, কিছু পক্ষ সংবিধান সংশোধনকে কঠিনতর করতে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে অনির্বাচিত বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে উচ্চকক্ষে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে চাইছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।


অন্যান্য দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চাইলেও, বিএনপি কেন একমত নয়- প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেছেন, কমিশন সনদের যে খসড়া দিয়েছে, তাতে বাক্যগত সংশোধন করেছে বিএনপি। সনদের প্রস্তাব আছে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। বিএনপি এতে সম্পূর্ণ একমত। সনদে সংবিধান, আইন, বিধি বিধানে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়েছে। বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


সনদকে আইনি ভিত্তি না দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেছেন, শুধু কমিশন নয়, সমস্ত দল এতে সই করবে। যা জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়। যা আইনের চেয়েও বড়। যা ‘লেজিটিমেট এক্সপেকটেশন অফ দ্য পিপল’ (জনগণের অভিপ্রায়)। জনগণের এই প্রত্যাশা সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে যুক্ত করার জন্য অঙ্গীকার করেছি। জুলাই ঘোষণাপত্রেরও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেবে বিএনপি। সংবিধানের চতুর্থ তফশিলে যুক্ত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র।


৭০ অনুচ্ছেদ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগেই প্রস্তাব করেছিলাম, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেই প্রস্তাব আজ গৃহীত হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এমপিরা দলীয় চাপে থাকবেন না, গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে ভোট দেবেন। যদি দ্বিকক্ষের সংসদ হয়, তবে উভয় কক্ষের সদস্যরা গোপন ব্যালটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন।


সালাহউদ্দিন জানান, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও বিএনপি একমত হয়েছে।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com