শিরোনাম
দেশের প্রথম মেডিকেল রোবট ‘মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেল’
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৩
দেশের প্রথম মেডিকেল রোবট ‘মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেল’
ফাইল ছবি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেল’ নামে এক রোবট বানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাঁচ শিক্ষার্থী।


এটি মানুষের শরীরের তাপমাত্রা, হার্টবিট, অক্সিজেনের পরিমাণ ও রক্তচাপ পরিমাপসহ রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সক্ষম। এছাড়া চলাফেরা করার পাশাপাশি সালাম দিয়ে নিজের নাম, দেশের নাম, জাতির জনকের নাম ও প্রধানমন্ত্রীর নাম বলতে পারে মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেল।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান, মো. আনাসুর রহমান, মো. মীর আমিন, মেহেদী হাসান ও ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল মোন্নাফের রোবটটি বানাতে সময় লেগেছে মাত্র ১৫ দিন। এতে সহযোগিতা করেছেন ইলেকট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক) মো. আবুল কাশেম। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তারা নিজেদের বিভাগের নামেই এর নাম দিয়েছেন মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেল। এর ব্যয়ভার বহন করে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষ।


চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রোবট বানানোর কাজ শুরু করে টানা ১৫ দিনে পরিপূর্ণ রোবট বানাতে সক্ষম হন তারা। গত ২৩ জানুয়ারি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছে রোবটটি হস্তান্তর করে শিক্ষার্থীরা। এটি নিয়ন্ত্রণে স্থাপন করা হয়েছে রেসবেরি পাই (জধংঢ়নবৎৎু চর), আরডোইনো পমগা (অৎফঁরহড় গবমধ) ও আরডোইনো ইউএনও (অৎফঁরহড় টঘঙ)। এটি মানুষের শরীরের রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ, ইসিজি, হার্টবিট, কলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিড ও ব্লাড সুগার পরিমাপসহ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সক্ষম। এ জন্য এতে যুক্ত করা হয়েছে বি.পি মনিটর, ইসিজি সেন্সর পালস অক্সিমেটরি সেন্সর, জিসিইউ সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও থার্মাল স্ক্যানার। আর চলাফেলা করার জন্য ক্যামেরা ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর লাগানো হয়েছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এসব ফিচার ব্যবহারও করা হয়েছে। সবকটি যথাযথভাবে কাজ করেছে বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।


রোবটটিতে নতুন ফিচার হিসেবে অ্যালকোহল ডিটেক্টর ও ফায়ার অ্যালার্ম যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটি যে কোনো জায়গা থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের জন্য মোবাইল অ্যাপস তৈরির কাজও করছে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী।


জানা যায়, সারা দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে শুধু নয়টিতে ইলেকট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগ চালু রয়েছে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করে থাকেন। ২০০৫ সাল থেকে এই বিভাগটি চালু হলেও সরকারিভাবে কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয়নি। ফলে বেসরকারিভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন তারা। নিজেদের বিভাগকে সারা দেশে পরিচিত করে তোলার পাশাপাশি সুযোগ পেলে মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখার কথা জানান দিতেই এই মেডিকেল রোবট বানানোর উদ্দেশ্য ইলেকট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের। মিস্টার ইলেকট্রোমেডিকেলকে আরো উন্নত করার জন্য কাজ চলছে।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর মো. আবুল কাশেম জানান, আমাদের শিক্ষার্থীদের বানানো রোবটটি বিভিন্ন বায়োমেডিকেল কাজ করতে পারে। প্রয়োজনীয় অর্থায়ন পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবেও বানানো সম্ভব।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছাত্র-শিক্ষকরা তাদের স্বল্প সামর্থ্যরে মধ্যে এই রোবট তৈরি করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম বলেন, মেডিকেল রোবটের ধারণাটি আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। যদি এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজে আসে তাহলে সানন্দে গ্রহণ করব।


বিবার্তা/উজ্জল/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com