বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে চীনের থাবা, বিকল্প ভাবনা জরুরি
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ০৮:০৭
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে চীনের থাবা, বিকল্প ভাবনা জরুরি
জুয়েল রাজ
প্রিন্ট অ-অ+

সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে এসে অভিজ্ঞতা লিখব বলে মন স্থির করেছিলাম। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে নিরবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতা বজায় থাকেনি, বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের কথা জানি না, মাসাধিক সময় সিলেটে অবস্থানের কারণে সিলেট শহরে যে অবস্থা দেখেছি, দেশের অন্যান্যশহরে এর ব্যাতিক্রম হওয়ার কথা না। চার্জার ফ্যান, চার্জার লাইট , রাইচ কুকার , হটপট, যা যা কিছু কিনতে যাই মেইড ইন চায়না এবং সেটা স্বাভাবিক বলেই আমি মেনে নিয়েছি। কারণ সারা বিশ্বেই মেইড ইন চায়না এইসব পণ্যের যোগান দিয়ে যাচ্ছে।


কিন্তু অবাক হয়েছি কাপড়ের বাজারে গিয়ে, সিলেট শহরে বিগত এক দশকে এক বিশাল বিপ্লব ঘটে গেছে অন্তত আমার চোখে যা ধরা পড়েছে। এক ইঞ্চি জায়গা কোথাও খালি নাই, তিন ধরনের ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে , এর একটি হচ্ছে রেস্টুরেন্ট, মিষ্টির দোকান আর হচ্ছে কাপড়ের শো-রুম । এর তিনটাই বিলাসী পণ্যসম্ভার । অর্থনীতি নিয়ে সেটি ভিন্ন আলোচনা , মানুষের হাতে অফুরন্ত অর্থ থাকলেই মানুষ বিলাসী পণ্য বা সেবার দিকে ঝুঁকে। সে আলোচনা অর্থনীতিবিদগণ ভালো করতে পারবেন।


একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে আমার চোখে লেগেছে কাপড়ের বাজার। দোকান বা শো রুম সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই পারে, কিন্তু যা কিনতে যাই তা ব্যবসায়ীরা খুব গর্ব করেই বলেন, চায়না প্রোডাক্ট ভাই, চোখ বন্ধ করে নিয়ে যান ভালো কোয়ালিটি। আমি সবিনয়ে জানতে চাই , ভাই বাংলাদেশি প্রোডাক্ট কিছু নাই? তারা সেটিকে কৌতুক হিসেবে মনে করেন!


অথচ বাস্তবতা হচ্ছে , বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা খাত হচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। বস্ত্রমন্ত্রীর বয়ানে, পোশাক শিল্পকে বলা হয় বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে এ শিল্প থেকে। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক এ শিল্পে কর্মরত আছেন, যার প্রায় ৬৫ শতাংশ নারী। এ দেশের প্রায় দুইকোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ দেশের জিডিপিতে পোশাক শিল্পের অবদান প্রায় ১১ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বিশ্বের প্রায় ১৬০টি দেশের মানুষ নাকি ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পোশাক পরিধান করেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় বাংলাদেশের মানুষকে বাধ্য করছে মেইড ইন চায়না পরিধান করতে!


বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭০ কোটি টাকা (রপ্তানিতে প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা ধরা হয়)। শীর্ষ ১২ রপ্তানি গন্তব্য তথা দেশে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ২০৪ কোটি ডলারের পণ্য। তার আগের বছরে এই বাজারগুলোতে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ১১ কোটি ডলারের পণ্য। এসব দেশে এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১৯৩ কোটি ডলারের।


রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশি পণ্যের শীর্ষ ১২ রপ্তানি গন্তব্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি,নেদারল্যান্ডস, ভারত, জাপান, পোল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। এই দেশগুলোর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও পোল্যান্ডে রপ্তানি কমেছে। বাকি ৯টি বাজারে পণ্য রপ্তানি ৭ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে।


ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে মোট রপ্তানির ৮৪ দশমিক ৫৭ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক। তবে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, পোল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় মোট রপ্তানির ৯২-৯৭ শতাংশ তৈরি পোশাক। আর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জাপান ও কানাডায় মোট রপ্তানির ৮৪ থেকে ৯০ শতাংশ তৈরি পোশাক। আর ভারতে মোট রপ্তানির ৪৭ শতাংশ তৈরি পোশাক।


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেডস্ট্যাটিসটিক্যাল রিভিউ ২০২১’ শীর্ষক সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়। এ অঞ্চলে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান।


বাংলাদেশ যখন , নিজেদের রপ্তানি বিদেশে বাড়াতে ব্যস্ত, কিন্তু নিজের ঘরের ২০ কোটি মানুষের দেশের বিশাল বাজার দখল নিয়ে নিচ্ছে চায়না। বাংলাদেশের পোষাকশিল্প দেশের বাজার নিয়ে ভাবছে না কেন?


যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভিয়েতনাম থেকেই প্রায় ৪০শতাংশ তৈরি পোশাক আমদানির করছে। আর বাংলাদেশ থেকে করে ৯ শতাংশ। এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার হিস্যা যথাক্রমে ৫ দশমিক ৬৯ ও ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। সেখানে ধারে কাছেও নাই বাংলাদেশ।


যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে চীন ৩৪৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম ৩৪০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পোশাক শিল্প দিন দিন বাজার হারাচ্ছে কমে আসছে রপ্তানির পরিমাণ। যদিও নতুন বাজারও খুঁজে নিচ্ছে বা খোঁজার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে করে কোনভাবেই চায়না ভিয়েতনামের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারব না।


দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ দুই তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক চীন ও ভিয়েতনাম। এই বাজারে চতুর্থ ও পঞ্চমশীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভারত ও ইন্দোনেশিয়া।


যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত বছর রপ্তানি কমেছিল ২৫ শতাংশ। চলতি বছরেও কমছে। গত ফেব্রুয়ারি শেষে রপ্তানিকমার হার দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ। বাংলাদেশ নেতিবাচক ধারা থেকে বের হতে না পারলেও অপর দুই প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনাম এই বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।


ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অবটেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ২১৮ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছেন। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম। তাই শুধু বিদেশের বাজার নয়, দেশের বাজারেও নজর দিতে পারেন এই খাতের ব্যবসায়ীগণ।


আমি আড়ং থেকে খাঁটি সুতি কাপড়ের একটি হাফ শার্ট কিনলাম ভ্যাট সহ ৭৬০ টাকা, যা ইংল্যান্ডের সাথে হিসাবকরলে ৫ পাউন্ডেরও কম দাম। সেই একই শার্ট একই ডিজাইন একই কাপড় ইংল্যান্ডে আমি নেক্সট শো রুম থেকে মূল্যহ্রাস দামে কিনেছি ২৫ পাউন্ডে , যার স্বাভাবিক দাম ৩০ থেকে ৩৫ পাউন্ড ছিল। একটা জিন্স প্যান্টের দাম বাংলাদেশে এক হাজার থেকে পনেরশ টাকার বেশি হওয়ার কথা না , সেই চায়নিজ জিন্স একদামের দোকান গুলোতে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আড়ং যদি পারে তাহলে অন্যরা পারবেন না কেন? বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের বাজার হাতছাড়া করছে কেন পোশাক শিল্প। মালিক পক্ষ শুধু বৈদেশিক মুদ্রার পিছনে না দৌড়ে বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পথ ও বন্ধ করতে পারেন। সবচেয়ে বড় যে বিষয় আরও বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।


ব্যবসায়ী যারা, তারা অবশ্যই নিজেদের ব্যাবসা বুঝবেন, মানুষ কুইক মানি মেকিং পছন্দ করে। ( কম সময় এবং শ্রমে অধিক মুনাফা)


তাই সাধারণ ব্যবসায়ী যারা তারা সেই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সেটাই স্বাভাবিক। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা চায়না পণ্যে অধিক মুনাফার জন্য সেখানেই গুরুত্ব দিয়েছেন হয়তো।


চাইনিজ কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত বিসিসিসিআই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক চেম্বার। ৭০০-এরও বেশি এন্টারপ্রাইজ এই চেম্বারের ৯৮৫৪ সদস্য, যার মধ্যে ৫০০-এর বেশি চীনা এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। বিসিসিসিআই ও এর সদস্যরা আরো বেশি চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং বাণিজ্য বাড়াতে কয়েক বছর ধরে বিসিসিসিআই চায়না কাউন্সিলফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি), বিডা, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্নপ্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।


ভূ রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ চায়নার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ভারতের সাথে তাদের শীতল যুদ্ধের অংশও বাংলাদেশ। তাই বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার দখলেও মরিয়া হয়ে উঠেছে চায়না, চায়নার সেই বাজার রোধ করার সক্ষমতাও বাংলাদেশের নাই। কারণ পৃথিবীর বড় বড় দেশে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ থেকে থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পণ্য এত অল্প দামে কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব নয়। ১৮ থেকে ২০ কোটি মানুষের এই বিশাল বাজার, চায়না কেন কোন দেশই ছাড়বে না।


খুব বড় বা আলোচিত সংবাদ হয়তো নয়, গত ২৪ মার্চ সব জাতীয় গণ মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে সংবাদটি, শিরোনাম ছিল “ঢাবিতে উদ্বোধন হলো ‘সেন্টার ফর চায়নাস্টাডিজ’ আমি আগ্রহ নিয়ে সংবাদটি পড়ি, সেখানে রাষ্ট্রদূত , ইয়াও ওয়েন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে‘সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজ’ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বিশেষ করে শিক্ষা, গবেষণা,সাংস্কৃতিক, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে এই সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।


‘সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজ’ এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. চেনডংঝিয়াও নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি ‘লেটার অবইনটেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়। যা পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এই চায়না স্টাডিজ কাজ করবে।


স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর পর, হঠাৎ করে চায়না বাংলাদেশে তাঁদের স্টাডি সেন্টার খোলে সেখানে অর্থ বরাদ্ধ দেয়ার পেছনে নিশ্চয় তাঁদের ভিন্ন ভাবনা আছে। স্টাডি সেন্টার বলছে, শিক্ষা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারের জন্য কাজ করবে। তার মানে বিশাল একটা অংশকে তারা চীনের ভাষা , সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষার জন্য অর্থ ঢালবে। মানে তরুণ প্রজন্মের একটা অংশকে তারা সাথে চায়।


চায়না কি বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু না শুধু ব্যবসায়ী? চায়না ব্যবসা ছাড়া আর কিছু বুঝে না। উইঘুরে মুসলিমদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কি বদল হয়েছে?


আমরা যেভাবে বয়কট ইন্ডিয়া বয়কট ইসরাইল বলছি কিন্ত বয়কট চায়না বলছি না। কারণ চায়না থেকে কম দামে জিনিস এনে বেশি দামে বিক্রি করে রাতারাতি টাকা বানানো যাচ্ছে। ইসরাইলের সাথে আমাদের ব্যাবসা বাণিজ্য নেই, তাই বয়কট ইসরাইল বলা সহজ। তাই সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজী নই আমরা ।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বাম প্রগতিশীল দাবিদার একটি অংশ চায়নার সাথে একাত্ম ছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে, তাই আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে ইন্ডিয়া বয়কটের নামে , শত্রুর শত্রু বন্ধু, নিয়মে চায়নার দিকে ঝুঁকলে সেই চক্র ভেদ করে বের হয়ে আসা কঠিন বাড়ির পাশে শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্থান আমাদের কাচগে জ্বলন্ত উদাহরণ। চীন কিভাবে দুই দেশকে সাহায্যের নামে হাতে থালা ধরিয়ে দিয়েছে।


অন্তত তৈ্রি পোশাকের বাজারটা যেন বাংলাদেশের হাতছাড়া না হয় সেদিকে সরকার এবং পোশাক প্রস্তুতকারীদের সংগঠনগুলোর দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। আপনারা বিদেশের বড় বড় নামী কোম্পানীর পাশাপাশি আলাদা ইউনিট বা কারখানা করে দেশের জন্য ও কাপড় প্রস্তুত করুন। বরং সেটা এক ধরনের ব্রান্ডিং হিসাবে কাজে লাগাতে পারবেন। আর সরকারের আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে কঠিনভাবে তৈরি পোশাক আমদানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ চায়না যে কাপড় দেয় তার চেয়ে ভালো পণ্য কম দামে বাংলাদেশের পক্ষে বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব। মহিলাদের কাপড়ের বাজার পুরোটাই পাকিস্তান এবং ভারতের দখলে,বাকি আছে শুধু পুরুষদের পোশাকের বাজার, সেটিও যদি চায়নার হাতে চলে যায় ,বাকি রইল কি তাহলে ?


(পরিসংখ্যান : অনলাইন থেকে নেয়া )


লেখক : সম্পাদক ব্রিকলেন নিউজ ও দৈনিক কালের কণ্ঠের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com