আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : হানিফ
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:২৪
আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আবারো পশ্চিমা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।


তিনি বলেন, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ যাতে ক্ষমতায় না আসতে পারে সেজন্য পশ্চিমা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এখন আবার সেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।



শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে কুষ্টিয়ায় দেশের বিভিন্ন মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে নিয়ে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একজন নোবেল বিজয়ী জাতির জন্য গর্বের, অহংকারের। কিন্তু নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস নিয়ে কেন আজকে এত আলোচনা-সমালোচনা। এই নোবেল কিভাবে এলো? আমরা পিছন ফিরে তাকালে দেখতে পারি ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। তখন বিএনপি-জামায়াত সরকারের পাঁচ বছরের দুঃশাসনের শেষ সময় ছিল। মানুষ তাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল এবং পশ্চিমা শক্তিগুলো বুঝতে পেরেছিল নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। কারণ আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দল। তাই খুব তড়িঘড়ি করে ড. ইউনূসকে নোবেল দেয়া হলো।



হানিফ বলেন, এই পশ্চিমা পরাশক্তি আমাদের মহান স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিল। তারা চেষ্টা করেছিল যুদ্ধ বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তান প্রভিন্স হিসেবে রাখার জন্য। সেই আমেরিকা কিন্তু তাদের পরাজয়ের ক্ষোভ ভুলতে পারেনি। অনেকের ধারণা পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যায় পশ্চিমা শক্তির হাত ছিল।


বাংলাদেশের মানুষের বিপদে ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ানোর কোন নজির নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হলে কেউ আইনের উর্ধ্বে এমন নয়। ড. ইউনূস হিলারি ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে ২০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। তিনি ওখানে টাকা দেন কিন্তু বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিপাকে ড. ইউনূস ১০ হাজার টাকা দিয়ে গরিব মানুষকে সহায়তা করেছে এমন নাজির নেই। তিনি আজ পর্যন্ত আমাদের স্মৃতিসৌধে কখনো যাননি, ভাষা শহীদদের কখনো শ্রদ্ধা জানাননি। উনি শুধু এক সুদ চিনেন। মানুষের টাকা কিভাবে নিয়ে যাবেন, মানুষকে কিভাবে নিঃশেষ করতে হবে সেটা উনি জানেন এবং সেই কাজটা উনি করেছেন।



তিনি বলেন, আমেরিকাতে গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে মাইক্রোক্রেডিট চালু করেছেন। প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেছেন। আমেরিকার সরকার বলেছে উনি ইনভেস্ট করে মানুষকে সহায়তা করছেন। কার টাকা তিনি নিয়ে গেলেন? উনি তো গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে চাকরি করেন। উনি বেতন পান কত টাকা? উনি ২ বিলিয়ন ডলার কোথায় পেলেন? বাংলাদেশ থেকে টাকা কোন পথে নিয়ে গেলেন। ২ বিলিয়ন ডলার বৈধ পথে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই তাহলে নিশ্চয়ই অবৈধ পথে মানি লন্ডারিং করে টাকা নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের জনগণের টাকা নিয়ে যাবে, কথা বলবে না? তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না, উনি কি আইনের ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন?


শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিক্ষার মাধ্যমে ভালো মানুষ তৈরি হয় এবং তার মধ্য দিয়ে ভালো জাতি তৈরি হয়, দেশ উপকৃত হয় এবং সেই দেশে এগিয়ে যায়। শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে সমাজ পরিবর্তন হবে। সুন্দর, সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশের জন্য আদর্শ, নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।


তিনি বলেন, আমাদের সমাজে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রত্যেক অভিভাবক চান তার সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোক এবং তারা এমন শিক্ষা লাভ করুক যাতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সুখকর হয়। জিপিএ-৫ পেতে হবে এবং ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। জিপিএ-৫ বা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া আর্থিক স্বচ্ছতা এনে দিতে পারে না। শুধু কি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারি হলে জীবন সুন্দর হবে। আদর্শ নাগরিক যদি না হয় তাহলে নিজেও সুখ পাবে না, পরিবার সুখ পাবে না এবং জাতিও উপকৃত হয় না।


২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে হানিফ বলেছেন, দেশব্যাপী ৫০০ জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা তার প্রমাণ। বিভিন্ন আদালতে বোমা হামলা করে বিচারপতি, আইনজীবীদের হত্যার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরাষ্ট্র করার অভিষেক হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে পুলিশ প্রটেকশনে বাংলা ভাই, জেএমবি রাজপথে প্রকাশ্য মিছিল করেছে। এতে প্রমাণ হয়েছিল বাংলাদেশ একটি জঙ্গিরাষ্ট্র।



নানান সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছিল এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছিল।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় জানিয়ে হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আমরা বহু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছি। বাংলাদেশকে আর পেছনের দিকে, জঙ্গিবাদী চক্রে নিয়ে যেতে দেয়া হবে না। বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করেই আমরা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখব।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা।


বিবার্তা/সোহেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com