ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র টাইগার হিল। প্রকৃতির ছায়ায় ভোরের প্রথম সূর্যের রশ্মিতে ঝলমল করে ওঠে এভারেস্ট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এমন নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতেই বছরের পর বছর টাইগার হিলে ভিড় জমান দেশি থেকে বিদেশি পর্যটকেরা।
সম্প্রতি পর্যটকের ভিড় কমাতে কুপন সিস্টেমে পরিবর্তন এনেছে দেশটির প্রশাসন। আকর্ষণীয় এ ট্যুরিস্ট পয়েন্ট নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন এক সমস্যা। ফলে এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ট্যুর অপারেটর থেকে পর্যটকেরা।
টাইগার হিলে ট্যুরের খরচ দিন দিন বেড়েই চলছে। এক ধাক্কায় টাইগার হিলে মাথাপিছু প্রবেশ মূল্য ৭০ টাকা হয়ে যাওয়ায় অসন্তুষ্ট পর্যটক থেকে ট্যুর অপারেটররা। তাদের দাবি, অপ্রয়োজনীয় কিছু খাতে এ বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। ফলে পর্যটকেরাও টাইগার হিল ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
যদিও প্রশাসনের দাবি, জায়গাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ন্যূনতম টাকা ধার্য করেছে জিটিএ এবং বন দফতর। প্রতিদিন গড়ে প্রায় শতাধিক মানুষ এ জনপ্রিয় জায়গাটিতে ঘুরতে আসেন। এখানে তাদের ফেলা বর্জ্য পরিষ্কারের জন্যই এ টাকা ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।
পর্যটকদের দাবি, টাইগার হিলে প্রথমে পার্কিং ফি বাবদ শুধু দশ টাকা দিতে হতো। পরে বন দফতর এবং জিটিএ ফি আদায় শুরু করতেই সে খরচের সঙ্গে জুড়েছে মাথা পিছু ৭০ টাকা প্রবেশ মূল্য। ফলে পর্যটক ছাড়াও সব মিলিয়ে গাড়ি চালকদের দিতে হচ্ছে ৮০ টাকা করে। অথচ সেই তুলনায় টাইগার হিলে পরিষেবা উন্নত হচ্ছে না বলে অভিযোগ কিছু পর্যটকদের।
টাইগার হিলে যেতে গাড়িকে আগে সংগ্রহ করতে হয় কুপন। সেই কুপন নিয়েও অসন্তুষ্ট গাড়ি চালক ও ট্যুর অপারেটররা। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রতিদিন টাইগার হিলে যাওয়ার জন্য ৫৫০টি গাড়িকে কুপন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি, দার্জিলিং সদর এবং জোড়বাংলো থেকে কুপন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টের জেনারেল সেক্রেটারি প্রদীপ লামার বলেন, এ কুপন সিস্টেম তুলে দেওয়া উচিত। বন দফতরের যে খাতে টাইগার হিলের জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। টাইগার হিলে কোনো আন্তর্জাতিক সীমান্ত নেই, তাহলে কুপনের কী দরকার? ওখানে যদি কোনো অভয়ারণ্য থাকেই, তাহলে প্রজননের সময়ে ১৬ জুন থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তো বন্ধ রাখা উচিত। তা তো হয়নি। বন দফতরের এ অভয়ারণ্যের নামে ফি নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এভাবে টাকা বেড়ে চললে দার্জিলিং শুধু টাকা দেওয়ার ট্যুরিস্ট স্পট হয়ে উঠবে। তাতে আগ্রহ হারাবেন পর্যটকেরা। এছাড়া গাড়ি চালক ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা রোজগারও হারাবেন।
প্রসঙ্গত, জনপ্রিয় এ পর্যটনকেন্দ্র টাইগার হিলে ২০১৯ সাল থেকেই কুপন সিস্টেম চালু করা হয়। শুরুতে এ কুপনের জন্য আলাদা কোনো ফির প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু পরে বন দফতর মাথাপিছু ৫০ টাকা চার্জের সঙ্গে যুক্ত হয়। খরচ আরও বাড়ে ২০২২ সালে। পাশাপাশি এর সঙ্গে যুক্ত হয় জিটিএ-এর ২০ টাকা চার্জ। যদিও বন দফতরের অধিকর্তার দাবি, পুরো ভারতে অভয়ারণ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রেই এ ফি দিতে হয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]