জাতীয়
'ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত'
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ২৩:০৮
'ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত'
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বেআইনি ও অযৌক্তিক দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তিবর্গের খোলা চিঠির ঘটনাকে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ বলে অভিহিত করেছেন।


বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ১৪ দলের নেতারা এসব কথা বলেন।


বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন দ্বারা সকল ধরনের বৈচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যে কোনো বৈচারিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার এ ধরনের অপতৎপরতা পবিত্র সংবিধান ও আইনের পরিপন্থী। ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আইনের আশ্রয় গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সেই সাংবিধানিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে চলমান বৈচারিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতাপূর্ণ দাবি আদালত অবমাননার শামিল।


তারা বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দল বিশ্বাস করে, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত বা নির্যাতিত কোনো ব্যক্তির ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করার দাবি উত্থাপন করতে পারে না। আর কোনো বিদেশি ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে বিচারাধীন কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি কেবল বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপই নয়, একই সাথে একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের উপরও আঘাত বটে।


বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. ইউনূস এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার চলমান রয়েছে। আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী আইনের চোখে সকলেই সমান; সেক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় বিবেচ্য বিষয় নয়। কেউ কোনো অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। ফৌজদারি আইন দেশের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নোবেল পুরস্কার পেলেই কেউ আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে চলে যায় না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল পুরস্কার অর্জনকারী অনেকের বিরুদ্ধে সেসব দেশের আইন অনুযায়ী মামলা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ড. ইউনূস আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ভোগ করছেন, আইনজীবী নিয়োগ করে জামিন নিয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছেন। এই মামলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র নেই।


নেতৃবৃন্দ বলেন, আইন, বিচারব্যবস্থা ও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে সুবোধসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির নিকট থেকে এমন ধরনের বিবৃতি প্রদান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং বেআইনি উদ্যোগ স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়। ইতোপূর্বে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মনবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্যও দেশি-বিদেশি অপশক্তি বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল। ড. ইউনূস-এর বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া গোষ্ঠীতন্ত্র ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বন্ধ করতে বিবৃতি প্রদান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী, প্রগতিশীল, সচেতন নাগরিক সামজকে গভীরভাবে হতাশ করেছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিক বিশ্বাস করে, শুধুমাত্র ড. ইউনূস নয় যে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ন্যায় বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


নেতৃবৃন্দ বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকার জনগণের ন্যায়বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সংবিধান, আইন ও বিচারব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাব বিস্তার করে এমন ধরনের বিবৃতি কিংবা তৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।


বিবার্তা/সোহেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com