অগ্নিঝুঁকি রোধে আরো কঠিন হচ্ছে ভবন অনুমোদন
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ১১:১১
অগ্নিঝুঁকি রোধে আরো কঠিন হচ্ছে ভবন অনুমোদন
সানজিদা আক্তার
প্রিন্ট অ-অ+

গত কয়েক বছর যতগুলো আগুনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রায় সব ইমারত নির্মাণে ডিজাইনের সঠিক বাস্তবায়নে ঘাটতি পাওয়া গেছে। অনুমোদনের দায়িত্বে থাকা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর তদারকি নিয়ে ছিল বিস্তর অভিযোগ। কারণ তাদের নাকের ডগায় গড়ে উঠেছে অনুমোদিত-অননুমোদিত হাজারো ভবন। যাদের বেশির ভাগই এখন অগ্নিঝুঁকিতে।


২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১৯ জন মারা যাওয়ার পর বেরিয়ে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। নকশা না মেনেই তলার পর তলা বাড়ানো হয়েছে ভবনটির। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি দায়ী করেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে।


এরপর ভবনটি নির্মাণে জড়িত ২১ জনকে আসামি করে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক। এই মামলায় ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফ আর টাওয়ারকে ১৯ থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, ওপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেয়া ও বিক্রির অভিযোগ আনা হয়। প্রায় এক বছর পর মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়।


১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এস এম এইচ আই ফারুক। ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদন চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এর এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত ও নকশা অনুমোদন করা হয়। রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।


অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্কিংয়ের জায়গার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে প্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয়েছে বাণিজ্যিক হিসেবে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা তা–ও রাখা হয়নি।


আগুন লাগার হার কমাতে, টেকসই ও নিরাপদ ভবন নিশ্চিত করতে ভবন নির্মাণের অনুমোদন আরো কঠিন করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।


রাজউক জানায়, ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিতে আগামী জুন থেকে স্থাপত্য নকশার পাশাপাশি আরও তিন ধরনের নকশা জমা দিতে হবে।


এতোদিন স্থাপত্য নকশায় ভবনের নির্মাণ অনুমোদন দেয়া হতো। আগামী ১ জুন থেকে ফায়ার, প্লাম্বিং ও স্ট্রাকচারাল নকশা ছাড়া কোনো ভবনের নির্মাণ অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জানায় রাজউক।


এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করা হয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানায় রাজউকের কর্মকর্তারা।


ইমারত নির্মাণের আর্কিটেকচারাল প্ল্যান (স্থাপত্য নকশা) ছাড়া আর কোনো প্ল্যান জমা নিত না রাজউক। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুযায়ী, আর্কিটেকচারাল প্ল্যান, স্ট্রাকচারাল প্ল্যান (কাঠামোগত), ফায়ার সেফটি প্ল্যান (অগ্নিঝুঁকি নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত পরিকল্পনা), ইলেকট্রিক্যাল প্ল্যান (ভবনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাসংক্রান্ত পরিকল্পনা) ও প্ল্যাম্বিং প্ল্যান (পানি সরবরাহ ও পয়োবর্জ্য নিঃসরণসংক্রান্ত পরিকল্পনা) সবই জমা দিতে হবে।


জানতে চাইলে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বিবার্তাকে বলেন, ‘ভবনের সার্বিক বসবাসজনিত নিরাপত্তা ও অগ্নিঝুঁকি কমাতে উর্পযুক্ত পরিকল্পনা জমাদানের সিদ্ধান্ত নগরের বাসযোগ্যতা বাড়াতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে এক্ষেত্রে উপযুক্ত পেশাজীবীদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে এবং একইসাথে নাগরিকরা যেন কোন ভোগান্তির শিকার না হয় সেদিকে কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’


অন্যদিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-এর সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বিবার্তাতে বলেন, ঢাকায় অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বৈদ্যুতিক গোলযোগ। অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ঢাকার সব ভবনের বিস্তারিত জরিপ এবং ডিজিটাল তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা, ঢাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা, ইমারত নির্মাণ এবং ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন, বিল্ডিং নির্মাণের পর অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিশ্চিত করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের প্রস্তাব তুলে ধরেন।


রাজধানী ঢাকায় গত ৫ বছরে ১০ হাজারের অধিক অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু ২০১৮ সালেই ২ হাজার ৮৮টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। গত ৫ মাসে ঢাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২১টির বেশি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১০টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা হয়েছে। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে। এছাড়া জ্বলন্ত সিগারেট ও গ্যাসের চুলার কারণে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। প্রায় ৩৯ শতাংশ অগ্নিকাণ্ডের কারণ ছিল বৈদ্যুতিক গোলযোগ। এছাড়া ১৬ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ জ্বলন্ত সিগারেট ও ১৪ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে গ্যাসের চুলার কারণে।


অগ্নিদুর্ঘটনার অতিঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে রাজধানীর কোতোয়ালি, বংশাল, চকবাজার, গুলশান ও মতিঝিল এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে ঢাকার সকল ভবনের বিস্তারিত জরিপ এবং ডিজিটাল তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ ৬ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল-পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বিবার্তাকে বলেন, বিপণিবিতান ও হাসপাতালের মতো সরকারি ভবনগুলো নিয়ে জরিপ হওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, ভবনের কাঠামোগত অবস্থা, অগ্নিঝুঁকি ও নকশা—এই চারটি বিষয়ে মূল্যায়ন করতে হবে।


ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিবার্তাকে বলেন, ২০১৮ সালে রাজধানীতে ১০০টি পুকুর ছিল, এখন ২৯টিতে পরিণত হয়েছে। ১০০টি দোকানের জন্য প্ল্যান অনুমোদন হলেও কার্যক্ষেত্রে ২০০টিতে পরিণত হয়— এ দিকগুলো চিন্তা করতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এগুলো রোধ করতে হবে।


রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বিবার্তাকে বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবন নির্মাণের অনুমোদন আরো কঠিন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।


‘ভবনের কোনো নকশার ব্যতয় ঘটলে ভবন মালিকের পরিবর্তে যে বা যারা ওই নকশার সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদেরকে জবাবদিহি ও শাস্তির আওতায় আনা হবে। পেশাজীবী ইনস্টিটিউটগুলোর মাধ্যমে তাদের শাস্তি কার্যকর করা হবে।’


অগ্নিদুর্ঘটনার প্রতিরোধে ইমারত নির্মাণ, জলাধার এবং ভূমির যথাযথ পরিকল্পনা রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, এখন শুধু ও ব্যবহার বাস্তবায়ন জরুরি।


গত ৪ মে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের ‘বারবার অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ: প্রতিরোধে করণীয়' শীর্ষক নগর সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনাসহ কোনো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভবন মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলে নেওয়া হয়, শাস্তি দেওয়া হয়। অন্যদিকে ভবনের যিনি নকশা পরিকল্পনা করেছেন, ভবনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের কিছুই হয় না। এটা এক প্রকার অন্যায়।


আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প রাজউক অংশের আওতায় একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্টে দেখা গেছে, রাজউকের আওতাধীন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ২২৯টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৪২টি ভবন রয়েছে অতি ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায়, যেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। আর ১৮৭টি ভবন কম ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোকে রেক্ট্রোফাইটিং করে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে।


রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) মো. মোবারক হোসেন বিবার্তাকে বলেন, এসব ভবনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।


রাজউকের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ হেলালী বলেন, আমাদের গবেষণা রিপোর্ট যদি মানতে না চান, তাহলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাধ্যমে ফের পরীক্ষা করাতে পারেন। সে সুযোগ তো আছে। ভবনটি এখনই ভেঙে ফেলত হবে, এমন নয়। তবে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে ভবনটি খালি করে সিলগালা করা উচিত।


রাজউকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্লান (ডিএমডিপি) এলাকার সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার আওতাধীন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের ভবনের ঝুঁকি নিরূপণ করতে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প: রাজউক অংশের আওতায় একটি গবেষণায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গবেষণার দায়িত্বে ছিল জেভি অব এনকেওয়াই (তুর্কি)। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল ঢাকার শেলটেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ডিএমডিপি এলাকার ৩ হাজার ২৫২টি ভবনের রেপিড ভিজ্যুয়াল অ্যাসেসমেন্ট (আরভিএ) এবং প্রিলিমিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট (পিইএ) করে ভূমিকম্প ঝুঁকি নিরূপণ করে।


রাজউকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গবেষণা প্রতিবেদনে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ৪২টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে। এসব ভবনের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি, মাদ্রাসা বোর্ডের একটি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩০টি ভবন। এ ছাড়া প্রতিবেদনে সাতটি প্রতিষ্ঠানের ১৮৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রেক্ট্রোফাইটিং করে মজবুত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এসব ভবনের মধ্যে রয়েছে ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির তিনটি, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের চারটি, মাদ্রাসা বোর্ডের ছয়টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১০টি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১৫৪টি ভবন।


বিবার্তা /সানজিদা/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com