করোনাত্তোর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সমগ্র বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক অস্থিরতা, বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে কয়েকটি দেশ দেউলিয়া হওয়া সত্ত্বেও বিশাল জনগোষ্ঠীর ছোট্ট বাংলাদেশ জাতির পিতার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি কৌশলের কারণে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রেখে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সাংবাদিকতার নামে একটি মহল ত্রিশ লক্ষ শহিদ ও দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে মহান স্বাধীনতা দিবসেই প্রশ্নবিদ্ধ ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার অপপ্রয়াস চালায়।

প্রথম আলো একটি প্রতিবেদনে সাংবাদিকতার সকল রীতিনীতি ও সভ্যতা-ভব্যতা উপেক্ষা করে একটি দারিদ্র শিশুর সরলতার সুযোগ নিয়ে, তাকে টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই ছবি তুলে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছে।

শুধু তাই নয়, শিশুটিকে দিয়ে জাকির হোসেন নামে একজন দিনমজুরের নাম করে তার জবানি আরোপ করেছে। এর প্রেক্ষিতে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠল, তখন তারা সংশোধনী দিলেও তথাকথিত জাকির হোসেনের কোন ছবি দিতে পারেনি। ফলে জাকির হোসেন গল্পটি যে মিথ্যা তা অতি সহজেই বোঝা গেল।

উল্লেখ্য, এই ধরনের বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত কর্মকাণ্ড ও কারসাজি এটিই প্রথম নয়। দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ প্রথম আলো করে যাচ্ছে। আমরা মনে করি সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বা বাক স্বাধীনতার নামে কেউ মিথ্যাচার করতে পারে না বা কল্পকাহিনী ছড়াতে পারে না। তা ছাড়া কোন অসংলগ্ন ব্যক্তি যদি সত্যিই স্বাধীনতাকে হেয় করে কোন কথা বলেই থাকে, সচেতন-দেশপ্রেমিক সাংবাদিকমাত্রই তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারে না। যেহেতু প্রথম আলো এটা করেছে, এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার- এটা পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং দেশ, রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা প্রথম আলো কর্তৃক স্বাধীনতা বিরোধী এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা সরকারের কাছে এই ষড়যন্ত্রের রহস্য উদঘাটন করে এর সাথে জড়িত সকলের আইনানুগ শাস্তি দাবী করছি।

আমরা জানতে পেরেছি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মশিউর মালেক এ ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি প্রথম আলো মহান স্বাধীনতাকে হেয় করে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল। তাই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

উক্ত ঘটনায় দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্ট অস্বস্তিকর পরিবেশের উপরে আমাদের সজাগ পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি। দেশের সকল সাংস্কৃতিক কর্মীসহ, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, আইনজীবী ও সকল শ্রেণি পেশার দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বন, অত্যন্ত ধৈর্য্য ধারণ করে, অতি সতর্কতার সাথে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও দেশের স্বাধীনতা বিরোধী এই ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসুন। ষড়যন্ত্রকারীদের সর্বত্র প্রতিহত ও বর্জন করে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে স্ব স্ব ভূমিকা জোরদার করুন। মনে রাখতে হবে রক্তে অর্জিত স্বাধীনতাকে কিছুতেই বিপন্ন হতে দেয়া যাবে না। জয় বাংলা।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে যে সব সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে- জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্য জোট, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু শিল্পীগোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ, বাউল শিল্পী সংসদ, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, বাঙালি সংস্কৃতি কেন্দ্র, জাতীয় গীতিকবি পরিষদ, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতি কেন্দ্র, বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, গৌরব’ ৭১, বিশ্বভরা প্রাণ, কৃষ্টি বন্ধন, স্বপ্ন সিড়ি সাহিত্য পরিষদ ও বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য ফাউন্ডেশন।

বিবার্তা/রোমেল/এমএ