‘বইমেলায় বিদায়ের সুর, ঈদের আমেজ যেন শেষ হতে চলল’
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৩৭
‘বইমেলায় বিদায়ের সুর, ঈদের আমেজ যেন শেষ হতে চলল’
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, বইমেলায় এখন বিদায়ের সুর বাজছে। আর কিছুক্ষণ পর এই বইমেলা আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিবে। সবার মন খারাপ।


এসময় তিনি বইমেলাকে ঈদের আমেজের সাথে তুলনা করে বলেন, ঈদ যখন যায় সন্ধ্যা নামে; তখন একটা নিঃস্ব নিঃস্ব ভাব মনে লাগে। বইমেলার আমেজও যেন এই বিষাদের সুর বাজাচ্ছে।


২৮ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইমেলার উদ্বোধন করে গেছেন। আজকে সেই আয়োজনের সমাপনী দিন। প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলতেন যদি সচক্ষে বইমেলা দেখতে পারতাম; এইবার তিনি সরাসরি বইমেলায় এসেছেন। গত দুইবার আমরা করেনার কারণে সেভাবে বইমেলা করতে পারিনি। যার কারণে প্রধানমন্ত্রীও সরাসরি সংযুক্ত হতে পারেননি। এইবার তাঁর আক্ষেপ গোছেছে। আর এই কৃতিত্ব সম্পূর্ণ তাঁরই। যেভাবে তিনি কোভিডকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন, দেশ যেভাবে আগাচ্ছে সার্বিকভাবে তাঁকে পরিশ্রম করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব এখন সংকটে মধ্যে রয়েছে, তারপরেও সকল সংকট কাটিয়ে আমরা বইমেলার আয়োজন করতে পেরেছি।


তিনি বলেন, এবারের বইমেলা সফল করার জন্য গত বছরের বইমেলা শেষ হওয়ার সাথে সাথে এইবারের বইমেলার জন্য আমরা প্রস্তুতি শুরু করি। অন্যান্য বইমেলার চেয়ে এইবারের আয়োজনের বিন্যাস কিছুটা সময় নিয়ে করা হয়েছে। অনেক কষ্ট হয়েছে; তবুও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকায় ব্যর্থতা রয়েছে, এতে তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।


তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন আয়োজন অন্যান্যবারের চেয়েও সুন্দর হয়। আয়োজক হিসেবে যারা ছিলেন এবং দর্শক শ্রোতা হিসেবে বইমেলাকে উপভোগ করেছেন তারা অত্যন্ত স্মার্ট ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় রয়েছে তা এখানেও বাস্তবায়িত হয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল মানুষের উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। সেদিন ধূলোবালি থাকায় অনেকের কষ্ট হয়েছে সেজন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন।


জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বইমেলা শুধু বই বেচাকেনার জায়গা নয়। অনেক প্রকাশকের হয়ত কিছু আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু এই জায়গা যে আনন্দ যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না, তা তারা উপভোগ করেছে। সমন্বিত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এইবারের বইমেলা সুবিন্যস্ত ছিল বলে জানান মন্ত্রী। বইমেলায় এমন একটি জায়গা যেখানে দলমত ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের মিলন ঘটে। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলাদলি থাকে না। সবাই এক হয়ে একমতের হয়ে বইমেলায় অংশগ্রহণ করি— সকলের প্রতি এই অনুরোধ জানান মন্ত্রী। বইমেলাকে সফল করার জন্য যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও চেষ্টা করেছেন তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি যারা নিরাপত্তার দািয়ত্বে ছিলেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান।


এসময় মন্ত্রী পুস্তক প্রকাশক, বিক্রেতা এবং লেখক যাদের মাধ্যমে চার হাজার বই প্রকাশিত হয়েছে বইমেলায়; তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। যারা এই বইমেলাকে নিজেদের আলো দিয়ে একটি মাস আলোকিত করেছেন এবং পুরস্কার পেয়েছেন তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অভিনন্দন জানান। সার্বিকভাবে তিনি বইমেলার সফল আয়োজনের জন্য বাংলা একাডেমিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।


বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন নিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৩’-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মো আবুল মনসুর। বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।


বিবার্তা/সাইদুল/রাসেল/এসএ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com