এবার ঈদে শিশুর পোশাক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০২
এবার ঈদে শিশুর পোশাক
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বৈশাখের খরতাপের মধ্যে পড়ছে এবারের ঈদ। ঈদে শিশুর কেনাকাটাই সবচেয়ে জরুরি। কারণ, ঈদের আনন্দ ওদেরই বেশি।


শিশুদের পোশাকে লম্বার সঙ্গে খাটো প্যাটার্ন আর গতানুগতিক ধাঁচ থেকে বাইরে আসার চেষ্টা করেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। ঈদে যেহেতু দীর্ঘ সময় নতুন জামা পরে বাইরে থাকা হয়, তাই উৎসবের ভাব আছে কিন্তু আরামদায়ক—এমন চিন্তা করেই তৈরি করা হয়েছে বাচ্চাদের পোশাক।


শিশুদের পোশাক বরাবরই রঙিন ভালো লাগে। লাল, হলুদ, কমলা, নীল, গোলাপি, আকাশী এমনকি সাদা রঙও শিশুদের ভালো মানায়। ছেলে শিশুদের পোশাকে সাদা, পেস্টাল ঘরানার রং, সাদার সঙ্গে হলুদ, নীলের ব্যবহার অনেক বেশি। মেয়েদের পোশাকে নীলের অনেক ধরন, লাল, স্কাইব্লু, সী গ্রিন, সাদা, হলুদ, ফিরোজা, গোলাপি, বাদামি, হালকা সবুজ ইত্যাদি রঙের ব্যবহার হয়েছে বেশি।


উৎসবে বেশ কয়েক বছর ধরে বাবার সঙ্গে ছেলে, মায়ের সঙ্গে মেয়ের পোশাকে মিল রাখার চল দেখা যাচ্ছে। এ বছরও অঞ্জনস, সেইলর, ক্লাব হাউসসহ অনেক ফ্যাশন হাউসই বজায় রেখেছে এই ধারা। সুতি জামায় এমব্রয়ডারি ও হাতের কাজও পেয়েছে প্রাধান্য। লম্বার সঙ্গে খাটো প্যাটার্নের পোশাক আর গতানুগতিক ধাঁচ থেকে একটু বাইরে আসার চেষ্টাও করেছে কিছু ফ্যাশন হাউস।


এবার ফ্যাশন হাউসগুলোতে ছেলে শিশুদের পোশাকে সব থেকে বেশি ব্যবহার হয়েছে সুতি, লিনেন, পাতলা খাদি ও গেঞ্জি কাপড়। ছোট হাতার ক্যাজুয়াল শার্ট, ফতুয়া, পায়জামা-পাঞ্জাবি সবই পাওয়া যাচ্ছে সব বারের মতই। একরঙা পাঞ্জাবি ছাড়াও পাতলা খাদি কাপড়ে চেকের ব্যবহার হয়েছে। তাছাড়া অনেক পাঞ্জাবিতে রয়েছে বুকে ও হাতায় এমব্রয়ডারির পাতলা কাজ।


মেয়েশিশুদের জন্য সুতি ও নেটের পোশাকের উপর সুতা, পুঁতি বা সিকুইন কাজের বাহারি ডিজাইনের পোশাক মিলছে। পোশাকের মোটিফে থাকছে ফুলেল নকশা ও রূপকথার প্রাধান্য। তাছাড়া গরমের বিষয়টা মাথায় রেখে লিলেন বা সুতির কাপড়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আজকাল জামদানি ও মসলিন কাপড় দিয়েও শিশুদের জন্য জামা, সালোয়ার কামিজ বিক্রি হচ্ছে ফ্যাশন হাউজগুলোতে।


বাচ্চাদের দাওয়াতের পোশাকে সিল্ক আর নেটের প্রাধান্য থাকলেও বেশির ভাগ পোশাকই সুতি এবং হাতাকাটা। প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে মৌলিক সব গাঢ় রং। বিক্রেতারাও জানান, গরমে লিনেন পোশাকের চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। কারণ, লিনেনে মেলে স্বস্তি আর পাওয়া যায় বাহারি নকশা। এ ছাড়া দাওয়াতের পোশাক হিসেবে সিল্ক, জর্জেট এবং সিনথেটিকের ব্যবহার থাকলেও এগুলো যাতে বাচ্চাদের অস্বস্তিতে না ফেলে, তাই ভেতরে রাখা হচ্ছে সুতির অতিরিক্ত আবরণ। কে ক্র্যাফটের স্বত্বাধিকারী খালিদ মাহমুদ খান জানান, ‘ঈদে যেহেতু দীর্ঘ সময় নতুন জামা পরে বাইরে থাকা হয়, তাই উৎসবের ভাব আছে কিন্তু আরামদায়ক—এমন চিন্তা করেই তৈরি করা হয়েছে বাচ্চাদের পোশাক। অনেক কারুকাজ থাকলে পোশাক ভারী হয়ে যায়, বাচ্চাদের আরাম নষ্ট করে। আবার মা বা মেয়ে এমনকি পুরো পরিবারের সবাই যাতে একই রং ও নকশার জামা পরতে পারেন, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে গাঢ় রং। প্রতিবছর আমরা কোনো একটি মৌলিক রংকেই বেশি প্রাধান্য দিই। এ বছরের জন্য নীল রংকে বেছে নিয়েছি।’


ক্লাব হাউসে ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ সুতির ফ্রক। দেশীয় ও পশ্চিমা উভয় ধরনের টপস পাওয়া যাবে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। অঞ্জনসের বাচ্চাদের সুতি, এমব্রয়ডারি ও হাতের কাজের ফ্রকের দাম পড়বে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। পাওয়া যাবে মা-মেয়ের সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাকও। দেশালে বাচ্চাদের সুতির ফ্রক পাওয়া যাবে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং টপস ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায়। সারায় সুতি ও ভিসকসের ফ্রক, টপস কিনতে খরচ পড়বে ৬০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। শৈশবে দুই থেকে সাত বছর বয়সীদের হাতাকাটা সুতির ফ্রক কিনতে খরচ পড়বে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।


ক্লাব হাউসে বাচ্চাদের সুতি, সিল্ক এবং জর্জেটের থ্রি–পিসের সালোয়ার–কামিজ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা এবং টু–পিসের পোশাকের সেট ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। সারায় ভিসকসের সালোয়ার–কামিজের দাম পড়বে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। অঞ্জনসে মেয়েশিশুদের সালোয়ার–কামিজের দাম ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। দেশালে অ্যাপ্লিক ও স্ক্রিনপ্রিন্টের সুতি টু–পিসের প্রতিটি সেটের দাম ১০০০-২০০০ টাকা। শৈশবে সুতি এবং লিনেনের সালোয়ার–কামিজের দাম পড়বে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। রং বাংলাদেশে সুতি ও লিনেন কাপড়ের তৈরি ওয়ান–পিস ও টু–পিসের কামিজ পাওয়া যাবে ৭২৫ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। শৈশব এবং ক্লাব হাউসে লিনেন বা সুতির ঘাগরা–চোলি পাওয়া যাবে ২০০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।


ক্লাব হাউসে মেয়েদের লেগিংস ও জেগিংস পাওয়া যাবে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার ভেতরে। সম্পূর্ণ সুতির স্কার্টগুলো পাওয়া যাবে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার ভেতর। শৈশবে নিট এবং সুতি উপকরণের প্যান্ট পাওয়া যাবে ৩৭০ থেকে ৬০০ টাকার ভেতর। সুতির টপস-প্যান্টের সেটের দাম পড়বে ১ হাজার ১০০ টাকা। স্কার্টের দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।


সেইলরে মেয়েদের রেয়ন, সিল্ক, জর্জেট দিয়ে তৈরি পোশাকের দাম ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। সারায় শিফন, সিনথেটিক পোশাকের দাম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। কে ক্র্যাফটসে পাওয়া যাবে ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার ভেতর। রং বাংলাদেশে সিল্ক আর নেটে তৈরি এসব পোশাকের দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। ক্লাব হাউসে সিল্কের দাওয়াতের জামার দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা। শৈশবে এক থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের দাওয়াতের পোশাক পাওয়া যাবে বয়সভেদে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত।


শৈশবে এক দিন থেকে আট বছর বয়সী মেয়েদের জুতা পাওয়া যাবে বিভিন্ন দামে। সেইলরে বাচ্চাদের জুতায় হালকা রঙে প্রাধান্য পেয়েছে গেমিং চরিত্র। ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার ভেতর পাওয়া যাবে এগুলো। এ ছাড়া বেবিগ্লি, মার্কিস প্রভৃতি অনলাইন শপেও পাওয়া যাবে বাচ্চাদের বাহারি জুতা। ক্লাব হাউসে রয়েছে সমুদ্রপারে পরার উপযোগী সিনথেটিক কাপড়ের অ্যাকটিভ ওয়্যার। এগুলো কেনা যাবে ৩০০ টাকায়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com