হোটেল শেরাটনের জমি সিটি কর্পোরেশনকে বুঝে নিতে নির্দেশ
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩, ১৫:৩৩
হোটেল শেরাটনের জমি সিটি কর্পোরেশনকে বুঝে নিতে নির্দেশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি কর্পোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরি করা হয়েছে, সেটা চুক্তি অনুযায়ী উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে বুঝে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।


সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।


এর আগে রবিবার (১১ জুন) রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি কর্পোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরির ঘটনা তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়।


হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট করেন। স্থানীয় সরকার সচিব, রাজউক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।


গত ১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।


প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি কর্পোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে একাই ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল।


ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ বলছে, বোরাক রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে চুক্তি ছিল ১৪তলা ভবন নির্মাণের। যার ৩০ শতাংশ পাবে সিটি কর্পোরেশন, বাকিটা বোরাক। সিটি কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী তাদের ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি সিটি কর্পোরেশন। উল্টো চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪তলার স্থলে ২৮তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বোরাক।


অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে বোরাক রিয়াল এস্টেটের সঙ্গে কর্পোরেশনের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি কর্পোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি কর্পোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অসম এ চুক্তি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। সংসদীয় কমিটিতেও আলোচনা হয়।


সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর বনানীর এই সম্পত্তি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভাগে পড়েছে। উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বনানীর মতো এলাকায় কর্পোরেশনের জমিতে ভবন নির্মাণে যে অসম চুক্তি হয়েছে, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তখন কিছু সুবিধাভোগী চক্র এই অসম চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে।


ঢাকা উত্তর সিটির সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বনানীর ৪৪ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে কর্পোরেশনের ৬০ কাঠা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ কাঠা জমিতে আগেই কর্পোরেশনের তিন তলা মার্কেট ছিল। মার্কেটের সামনে প্রধান সড়ক লাগোয়া প্রায় ১৬ কাঠা খালি জমি ছিল। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল কেবল ৪৪ কাঠা জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য। সামনের ১৬ কাঠা থাকবে খোলা জায়গা। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে পরে সামনের খালি ১৬ কাঠা জমিও প্রকল্পে যুক্ত করে ৬০ কাঠা জমিতে ১৪তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি করা হয়।


কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোরাক সামনের ১৬ কাঠা খালি জমিতে ২৮তলা ভবন নির্মাণ করে। চুক্তি ভঙ্গ করে ২৮তলা ভবন না করতে বোরাককে চিঠি দিয়ে কাজ করতে বারণ করে সিটি কর্পোরেশন। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কর্পোরেশন কেবল চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে। কাজ বন্ধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com