শিরোনাম
তিতলির আঘাতে ভারতে নিহত ৮
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০১৮, ১২:২১
তিতলির আঘাতে ভারতে নিহত ৮
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। তাণ্ডব চালিয়েছে এ দুই রাজ্যজুড়ে। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ৮ জন।


বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, তিতলির তাণ্ডবে ঘর ও গাছ চাপা পড়ে অন্তত আটজনের প্রাণ গেছে; উড়ে গেছে শত শত ঘর।


ঘণ্টায় দেড়শ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে উড়িষ্যার গোপালপুর এবং কলিঙ্গপত্তমের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানে।


ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশের এ দুই জেলায় তিতলি আঘাত হানার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রদেশের উপকূলীয় এলাকার গ্রামগুলোর সঙ্গে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের পালাসা রেলস্টেশন।


এনডিটিভির জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের পার্শ্ববর্তী উড়িষ্যায় আঘাত হানে তিতলি। এ সময় ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটারের বেশি বেগে বাতাসের পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাত হয়। তবে উড়িষ্যায় তিতলির আঘাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক।


অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে তিতলি। ঘূর্ণিঝড় তিতলি আছড়ে পড়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যার মধ্যে বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভূবনেশ্বর থেকে বিমানের ৫টি ফ্লাইটের উড্ডয়ন এবং অবতরণ বাতিল করেছে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স।


উড়িষ্যার গ্যাঞ্জাম, গজপতি, ক্ষুরদা, জগত্সিংপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক ও বালাসোর জেলায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি।


এসব জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ের আঘাতে গাছ উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও টেলিফোন সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও এসেছে।


সতর্কতামূল ব্যবস্থা হিসেবে আগেই তিন লাখ লোককে উপকূলীয় নিচু এলাকা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। উড়িষ্যার রাজ্য সরকার ১৮টি জেলায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করে। দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।


ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, পরিশ্চমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় আগামী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পরে। সেক্ষেত্রে দুর্গাপূজার উৎসবের মৌসুমে মানুষকে ভুগতে হতে পারে।


তিতলির প্রভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে দুদিন ধরে। স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারে কক্সবাজারের শাহপরীর দ্বীপ ও কুতুবদিয়ার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।


তবে তিতলি ভারতের তিনটি রাজ্য ঘুরে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা উপকূলেও চলে আসতে পারে বলে যে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদের ছিল, তা এড়ানো গেছে ঘূর্ণিঝড়টি আগেই দুর্বল হয়ে যাওয়ায়।


শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, তিতলি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে ক্রমশঃ আরো দুর্বল হতে থাকবে।


তবে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্য এখনো বেশি। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে।


এই আবহাওয়ায় সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


সেই সঙ্গে সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।


আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।


আর খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।


সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা শুক্রবার ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমে আসতে পারে।


বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খেপুপাড়া, ২৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়, ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


কক্সবাজারের টেকনাফে বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com