ইন্দোনেশিয়া সুলাওয়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও বড় ধরনের সুনামিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি) রবিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি আরো বলেছে, প্রাথমিকভাবে যা ভাবা হয়েছিল ক্ষয়ক্ষতি তারচেয়েও অনেক বেশি হয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র সুতোপো পুরও নুগরোহো বলেছেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় কিছু আগে আঘাত হানা ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনের নিচে বহু লোক চাপা পড়ে আছে। ভূমিকম্পের কিছুক্ষণ পর দ্বীপের পালু শহরে ২০ ফুট উঁচু সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ে। ভূমিকম্পের পর থেকে এখনো পর্যন্ত ওই এলাকায় পরাঘাত অব্যাহত রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জকো উইদাদো রবিবার পালু শহরে গিয়েছেন এবং দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখছেন।
দুর্যোগ কবলিত সুলাওয়েসি দ্বীপের বাসিন্দাদের এখন খাবার ও নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া সেখানে ব্যাপক লুটপাট চলছে।
৩৫ বছর বয়সী রাইসা কুসুমা বলেন, আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত। প্রতি মিনিটে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ আসছে। নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ছোট মার্কেটগুলোতে ব্যাপক লুটপাট চলছে। তিনি পালু শহরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
ইন্দোনেশিয়ার ভাইস-প্রেসিডেন্ট জুসুফ কাল্লা বলেন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হতে পারে। আগের দুর্যোগগুলোর ভিত্তিতে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ৫৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
হতাহতের এই সংখ্যা শুধু পালুর। ত্রাণ সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে যে অন্যান্য দুর্গত এলাকার খবর পাওয়া গেলে মৃতের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।
পালুর উত্তরে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের নিকটবর্তী দংগাল এলাকায় ব্যাপক প্রাণহানী ঘটেছে বলে ধারণা কর্তৃপক্ষের। তিন লাখ বাসিন্দার এই এলাকাটি থেকে মাত্রই খবর আসা শুরু হয়েছে।
উদ্ধার তৎপরতায় ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। তল্লাশি ও উদ্ধার কর্মীরা ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে জীবিতদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে লোকজন অবস্থান নিয়েছে। হাসপাতালের বাইরে তাঁবু গেঁড়ে আহত লোকজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জাতীয় তল্লাশী ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান মুহাম্মদ সিয়াউগি বলেন, পালু শহরের হোটেল রোয়া-রোয়া থেকে আমরা জীবিত ২৪ জনকে উদ্ধার করেছি। গতকাল আমরা ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে সাহায্যের জন্য মানুষের চিৎকার শুনতে পেয়েছি। হোটেলে ১৫০ জন লোক ছিলেন।
ভূমিকম্পে পালু কারাগারের দেয়ালগুলো ভেঙে পড়ার পর ৫৬০ জন কারাবন্দির মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনতারা। এর পাশাপাশি দংগাল কারাগার থেকেও শতাধিক বন্দি পালিয়ে গেছে।
ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে হাজারো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে। ভূমিধসে শহরের প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। উদ্ধারকর্মীরা বলেন, বেশির ভাগ অঞ্চল বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি ও এএফপি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]