শিরোনাম
বাল্যবিয়ে নিয়ে চাপে মালয়েশিয়া
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:১৮
বাল্যবিয়ে নিয়ে চাপে মালয়েশিয়া
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মালয়েশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত কেলানতান প্রদেশে ৪৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি দ্বিতীয় বিয়ে করেছে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে। মালয়েশিয়ার দৈনিক নিউ স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দারিদ্র্যের কারণে মেয়েটির বাবা-মা এ অসম বিয়েতে সম্মতি দিতে বাধ্য হন। এর পর গত জুলাইয়ে ইসলামি শরিয়া আদালতে এই বিয়ে অনুমোদিত হয়।


এখানে বলে রাখা ভালো যে, কেলানতান প্রদেশেই এক রাবার ব্যবসায়ী তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ১১ বছরের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন যে মাসে, সেই মাসেই বিতর্কিত এই বিয়ে হয়েছে। তবে ঘটনাটি প্রকাশ পেয়েছে চলতি সপ্তাহে।
মালয়েশিয়ায় বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৬ বছর। তবে শরিয়া আদালত ও অভিভাবকের সম্মতিতে এর চাইতে কম বয়সি মেয়েদেরও বিয়ে দেয়া যায়।


মেয়েটির বাবা-মা'র বরাত দিয়ে নিউ স্ট্রেইটস টাইমস লিখেছে, ১৩ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ও লেখাপড়া বন্ধ হওয়া মেয়েটির ‘ভালো ভবিষ্যতের' জন্য তারা এই বিয়ে দিয়েছেন।


একইভাবে কেলানতানে বাবা-মার সঙ্গে থাকা ১১ বছরের ওই থাই মেয়েটিরও লেখাপড়া বন্ধ হয়েছিল, তার পরিবারও দরিদ্র। দুই বউ এবং ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি ছয় সন্তানের বাবা ৪১ বছর বয়সি রাবার ব্যবসায়ী থাইল্যান্ডে গিয়ে গোপনে মেয়েটিকে বিয়ে করে। তার এক বউ বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করলে এই বিয়ের খবর প্রকাশ পায়। পরে অনুমতি না নেয়ার দায়ে ওই ব্যক্তিকে জরিমানা করে শরিয়া আদালত, তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করার জন্য তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।


ওই ব্যবসায়ী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলে, পাঁচ বছর পর তার নতুন স্ত্রীর বয়স ১৬ বছর হলে বিয়ের সনদের আবেদনের মাধ্যমে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আদায় করা হবে। মেয়েটিকে থাইল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং তাকে একটি সেবাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।


অসম বিয়ের খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর শিশুঅধিকার নিয়ে কর্মরত গ্রুপগুলো সোচ্চার হয়ে ওঠে। ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে এই বিয়েকে ‘অগ্রহণযোগ্য' আখ্যায়িত করে এ ধরনের বিয়ে বন্ধে আইনি পরিবর্তন আনতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মালয়েশিয়ায় দুই ধরনের বিচারব্যবস্থা রয়েছে। দেশটির তিন কোটি ১০ লাখ নাগরিকের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মুসলিম, যাদের পারিবারিক, বিয়ে ও ব্যক্তিগত নানা বিষয়ের ফায়সালা শরীয়া আদালতের মাধ্যমে হয়ে থাকে।


মানবাধিকার সংগঠন লইয়ারস ফর লিবার্টি সর্বশেষ ঘটনায় ৪৪ বছরের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মেয়েটিকে ‘যৌনতায় প্ররোচিত' করার ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বিয়ের কয়েক মাস আগে থেকে মেয়েটি তার পরিচিত থাকার বিষয়টি জানতে পেরে এই সন্দেহ করছে তারা।


সংগঠনটি বলেছে, শিশুকে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ থেকে বাঁচতে এখন এ ধরনের বিয়ের সুযোগকে কাজে লাগানো হচ্ছে।


মালয়েশিয়ার মানবাধিকার কমিশন বলেছে, আইনের সুযোগ নিয়ে অভিভাবকরা এখন বিয়ের ছদ্মবেশে তাদের শিশু সন্তানকে ‘বিক্রি করতে পারছে'।


মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল বলেছেন, সর্বশেষ প্রকাশিত ঘটনাটি তারা তদন্ত করে দেখছেন। তবে এই বিয়ে শরিয়া আদালতে অনুমোদিত হওয়ায় তাদের হাত-পা বাঁধা।


তিনি বলেন, মুসলিম মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়িয়ে ১৮ বছর করতে চাইছে সরকার। সূত্র : এএফপি


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com