শিরোনাম
‘সুচির পদত্যাগ করা উচিত ছিলো’
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০১৮, ১৫:২২
‘সুচির পদত্যাগ করা উচিত ছিলো’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযানের ঘটনায় দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচির পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিদায়ী হাইকমিশনার জাইদ রাদ আল হুসেইন।


তিনি বলেছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাবেক এই নেত্রী যেভাবে ঘটনাটিকে প্রশ্রয় দেয়ার চেষ্টা করেছেন তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।


সম্ভাব্য গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাইদ এই মন্তব্য করলেন।


মিয়ানমার জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তারা প্রশ্রয় দেয়নি।


সোমবার প্রকাশিত হওয়া জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সুচিকেও সহিংসতা বন্ধে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দায়ী করা হয়।


জাইদ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, সুচি এমন অবস্থানে ছিলেন যে কিছু করতে পারতেন। সুচি অন্ততপক্ষে নিশ্চুপ থাকতে পারতেন কিংবা সবচেয়ে ভালো হলো তিনি পদত্যাগ করতে পারতেন।


তিনি বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মুখপাত্র হওয়ার কোনো দরকার সুচির ছিলো না। তার বলার দরকার ছিলো না যে, এগুলো ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছিল। তিনি বলতে পারতেন যে দেখো আমি জাতির নেতা হতে প্রস্তুত কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে না।


রোহিঙ্গা নিপীড়ন থেকে মিয়ানমার সেনাদের নিবৃত্ত করতে কোনো চেষ্টা না করায় সমালোচিত সুচির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার দাবি উঠলেও ১৯৯১ সালে দেয়া ওই পুরস্কার কেড়ে নেয়া হবে না বলে বুধবার নোবেল কমিটি জানিয়েছে।


৭৩ বছর বয়সী এই নারী সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ না করলেও নৃশংসতার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি নিন্দা জানানোর বিষয়ে তার উপর আন্তর্জাতিক চাপ আছে।


কয়েক দশক জুড়ে সুচি সবসময় প্রশংসিত ছিলেন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে তার সংগ্রামের কারণেই। সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রায় ১৬ বছর গৃহবন্দী ছিলেন তিনি। ২০১২ সালেও যখন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুত হয় তখনো তিনি মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন।


তখন বিবিসিকে সুচি বলেছিলেন, মুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছে কিন্তু বৌদ্ধরাও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এগুলোকে তিনি স্বৈরশাসনের দুর্ভোগ হিসেবে চিত্রিত করেছিলেন তখন।


২০১৫ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে সুচির দল বড় জয় পায় নির্বাচনে এবং তিনি পরিণত হন দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতায়।


তবে ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হলে সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চলছে না বলে দাবি করেন তিনি। গত বছর আগস্টে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার অনেক সুযোগ থাকলেও সুচি তা ব্যবহার করেননি, এমনকি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও যাননি তিনি।


পরে তিনি পুরো রোহিঙ্গা সংকটকে ব্যাপক ভুল তথ্য বা বিকৃত তথ্যের সমাহার বলে উল্লেখ করেন। যদিও একই সাথে দুর্ভোগের শিকার ব্যক্তিদের জন্য দুঃখও প্রকাশ করেন।


তবে জাইদ রা'দ আল হুসেইন সেনাবাহিনীকে ছাড়া দেয়ার জন্য জন্য সুচিকে দায়ী করে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, সুচির অন্তত চুপ থাকা উচিত ছিলো, ভালো হতো পদত্যাগ করলে এবং গৃহবন্দিত্বে ফিরে গেলে। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com