শিরোনাম
কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন ‘ভুয়া'
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৩৪
কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন ‘ভুয়া'
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে যাত্রা করে নেপালের কাঠমান্ডুতে ত্রিভূবন বিমানবন্দরে নামার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১। এতে আরোহীদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৫১ জন নিহত হন। পাইলট আবিদ এবং কো পাইলট পৃথুলা রশিদও নিহতদের মধ্যে ছিলেন।


এ ঘটনায় পাইলটকে দায়ী করে সোমবার কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘পাইলটের ধারাবাহিক কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।''


এতে আরো বলা হয়, ''পাইলট বিষন্ন ছিলেন, ককপিটে অনবরত ধূমপান করেন, ফ্লাইটে নারী সহকর্মী সম্পর্কে অবমাননাকর কথা বলছিলেন। এছাড়া তিনি আগে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।''


এদিকে কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনটিকে ‘ভুয়া' বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।


ওই ঘটনার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে তারা বলছে, ইউএস-বাংলাকে ‘হেয় করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে' কাঠমান্ডু পোস্ট এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। লিখিতভাবে এর প্রতিবাদ জানানো হবে।


অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির এই ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটিতে নেপাল ও বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের কর্মকর্তারা রয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশনের বিধি অনুসরণ করে তাঁরা কাজ করছেন।


ওই কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে থাকা ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহও প্রতিবেদনটির সত্যতা নাকচ করেছেন।


‘নেপাল সরকারের আলাদা কোনো তদন্ত কমিটি নেই’
ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ বিভাগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘কাঠমান্ডু পোস্ট নেপাল সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা ভিত্তিহীন। কেননা নেপাল সরকারের তো আলাদা কোনো তদন্ত কমিটিই নেই।


তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশনের অধীনে একটিই তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সেখানে বাংলাদেশ, নেপাল, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন, উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান – সবার প্রতিনিধি আছে।''


এই কমিটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তারা কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি। তাহলে কীভাবে বলা হলো, পাইলট মানসিক চাপে ছিলেন? এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক বক্স রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। আমরা যত দূর জানি, ডিসেম্বর নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।''


পাইলটের মানসিক চাপ, ককপিটে অনবরত ধূমপান এবং নারী সহকর্মী সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সে বিষয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ককপিটে কী হয়েছে, তা তো আমরা জানি না। কারণ, আমাদের হাতে তো কোনো তদন্ত প্রতিবেদন নেই। তবে ফ্লায়িংয়ের আগে পাইলট পুরোপুরি ফিট ছিলেন। যদি তাঁর কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা থাকত, তাহলে মেডিকেল টেস্টে ধরা পড়ত। আর তাঁর কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ তো নারী, কথা বললে তো তিনি নারীর সঙ্গেই কথা বলবেন।''


‘আমাকে ছাড়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ হতে পারে না’


যে প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট এই খবর ছেপেছে, তা ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্ঘটনাটি তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্য এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি)-র প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ।


তিনি বলেন, ‘‘যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে তা ভুয়া। কারণ, আমরা তদন্তের ৫০ ভাগের মতো কাজ শেষ করেছি। আর আমাকে ছাড়া তদন্ত কমিটির কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ হতে পারে না।''


তিনি জানান, ‘‘আনুমানিক ডিসেম্বরে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারব বলে আশা করি।''


পরে ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘কাঠমান্ডু পোস্ট নেপাল সরকারের যে রিপোর্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন করেছে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই প্রতিবেদন করেছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কারণ এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি বা তদন্ত কাজ শেষ হয়নি।’’


তিনি বলেন, ‘‘ইউএস-বাংলার ককপিটে পাইলটের ধূমপানের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের ফ্লাইটের ককপিটে ধূমপান নিষিদ্ধ। পাইলট এবং ক্রুদের চেক করে বিমানে ওঠানো হয়। আর যদি ধূমপান করতো তাহলে ফায়ার অ্যালার্ম বাজত। ককপিটে সিসি ক্যামেরা থাকে না। তাই এটা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়।’’ সূত্র : ডয়চে ভেলে


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com