শিরোনাম
চীনের গোপন বন্দিশিবিরে আটক ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০১৮, ১৫:৫৬
চীনের গোপন বন্দিশিবিরে আটক ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চীন দেশটির ১০ লাখের বেশিউইঘুর মুসলিমকে ‘উগ্রবাদ-বিরোধী শিবিরে’ আটকে রেখেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক একটি কমিটি দাবি করেছে, তারা বিশ্বস্থ সূত্র থেকে এ তথ্য জানতে পেরেছে।


জাতিসংঘের ‘এলিমিনেশন অব র‍্যাসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন’ কমিটির সদস্য গে ম্যাকডোগাল শুক্রবার জেনেভায় এই বিশ্ব সংস্থার চীন বিষয়ক দু’দিনব্যাপী বৈঠকের প্রথম দিনে এ দাবি করেছেন।


তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চীন সরকার উইঘুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলকে ‘এক বিশাল বন্দিশিবিরে’ পরিণত করেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।


তিনি আরো বলেন, আরো ২০ লাখ মুসলিমকে তথাকথিত পুনঃশিক্ষা কেন্দ্রে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দীক্ষায় বাধ্য করা হচ্ছে।


চীনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। চীনের ৫০ সদস্যের শক্তিশালী প্রতিনিধি দল বলেছে, তারা সোমবার এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেবে।


বেজিং অবশ্য অতীতে এ ধরনের বন্দিশিবিরের অস্তিত্ব থাকার কথা অস্বীকার করেছে।


চীনের জাতিগত উইঘুর মুসলিমদের বেশিরভাগ সেদেশের শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাস করে। প্রদেশের শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগ জনগোষ্ঠী উইঘুর সম্প্রদায়ের।


গত কয়েক মাস ধরে এ খবর ছড়িয়ে পড়েছিল যে, জিনজিয়াংয়ের উইঘুর ও অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের ব্যাপক হারে আটক করা হচ্ছে।



অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘের এই কমিটির কাছে নানা তথ্যচিত্র তুলে ধরে দাবি করেছে, চীনা মুসলিমদেরকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।


উইঘুর মুসলমানদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস’ বলেছে, বন্দিদেরকে কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই আটকে রাখা হচ্ছে এবং সেখানে তাদেরকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শ্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বন্দিদেরকে ঠিকমতো খেতে দেয়া হয় না এবং ব্যাপকভাবে নির্যাতন করা হয়।


গত এপ্রিলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা লরা স্টোন দাবি করেছিলেন, চীন সরকার সেদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে আটকে রেখেছে।


এর প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, যে কেউ জিনজিয়াং প্রদেশ সফরে এসে দেখতে পারেন, এখানকার জনগণ শান্তিতে বসবাস করছে এবং সন্তুষ্টচিত্তে কর্মজীবন উপভোগ করছে। তারা উন্নত জীবনযাপন করছে বলেও তিনি দাবি করেন।


এদিকে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিংশিয়া অঞ্চলে একটি নতুন মসজিদ ভাঙার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে মুসলিমরা।


হুই সম্প্রদায়ের মুসলমানরা বৃহস্পতিবার উইঝু শহরের ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করে। ওইদিন সকাল থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত বিক্ষোভ করে তারা। কেউ কেউ বলেছে, তারা সরকারকে মসজিদে হাতও লাগাতে দেবে না।


উইঝু শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, উইঝু শাহী মসজিদ ভবন নির্মাণে কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন ছিল না। এ কারণেই মসজিদটি ভেঙে ফেলার ঘোষণা গত ৩ আগস্ট এক নোটিসে জানায় শহর কর্তৃপক্ষ। আর এতেই উইঝুর বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সঞ্চার হয়। সূত্র: বিবিসি ও আল জাজিরা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com