গুহা থেকে শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযানের পর থাই কিশোর ফুটবলারদের প্রথমবারের মতো দেখা মিললো হাসপাতালের বিছানায়। হাসপাতাল থেকে এই প্রথম ১২ কিশোরের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গুহা থেকে উদ্ধার পাওয়া কিশোর ফুটবলাররা হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষে পাশাপাশি বিছানায় বসে বা শুয়ে আছে। তাদের পরনে হাসপাতালের গাউন ও মুখে মাস্ক দেখা যায়।
কিশোর ফুটবলারদের একজন ক্যামেরা দেখে বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়েছে। তবে গুহার ভেতরে দীর্ঘদিন থাকা এবং বিপদজনক উদ্ধার অভিযানের ধকল সামলাতে তাদের কিছুটা সময় প্রয়োজন। তাদের কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
কিশোরদের পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষের কাঁচের দেয়ালের বাইরে থেকে তাদের সন্তানদের দেখতে দেয়া হয়।
এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এই উদ্ধার অভিযানের সময় কিশোর ১২ ফুটবলার ও তাদের কোচকে এক ধরণের ঔষধ দেয়া হয়েছিল, যাতে তারা আতঙ্কিত না হয়।
উদ্ধার কাজে সরাসরি অংশ নেয়া একজন ডুবুরি জানিয়েছেন, অন্ধকার ও সংকীর্ণ জায়াগা এবং পানির ভেতর ডুব দিয়ে বের করার সময় কিশোররা যাতে আতঙ্কিত না হয়, সেজন্য কড়া ডোজের ঘুমের ঔষধ দিয়ে তাদের গুহা থেকে বের করে আনা হয়।
থাই নেভি সিল থেকেও গুহার ভেতরে কিশোর ফুটবলারদের উদ্ধার অভিযানের কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
থাই নেভি সিলের সাবেক সদস্য চিয়েনান্ত পীরানারং এএফপিকে বলেছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঘুমিয়ে ছিলো। কেউ কেউ তাদের আঙ্গুলের ঝাঁকুনি দিয়েছিলো। আমার কাজ ছিলো, তাদের বের করে আনা।
এই কিশোরদের প্রত্যেকের জন্য দু'জন করে ডুবুরি ছিল। তাদের শুকনো অংশ দিয়ে পার করার জন্য স্ট্রেচার ব্যবহার করা হয়।
থাই নেভি সিলের প্রধান বলেন, ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে গুহা থেকে উদ্ধারের মাধ্যমে ক্ষীণ আশা বাস্তব হয়েছে। আমাদের ক্ষীণ আশা ছিল যে, তারা বেঁচে থাকতে পারে। তাদের উদ্ধার করতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়েছিলাম। আমাদের কেবলমাত্র ক্ষীণ আশা ছিল, তার উপর ভিত্তি করে আমরা কাজ করেছি।
এই কিশোর ফুটবলাররা থাম লুয়াং গুহায় বেড়াতে গিয়ে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে আটকা পড়েছিল। তাদের উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান বিশ্বকে নাড়া দেয়। গুহায় প্রবেশের নয়দিন পর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়।
তিনদিনের জটিল অভিযানের প্রথমদিনে রবিবার উদ্ধার করা সম্ভব হয় চারজনকে। পরদিন সোমবার উদ্ধার হয় চারজন। সবশেষে মঙ্গলবার বাকি চার কিশোর ও তাদের কোচকে উদ্ধার করা হয়।
কিশোরদের প্রত্যেকের প্রায় দুই কেজি করে ওজন কমেছে। কিন্তু তাদের শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল বলে বলা হয়। উদ্ধারের সাথে সাথেই তাদের হাসপাতালে নেয় হয়।
উদ্ধারের পর ডুবুরিসহ অভিযান জড়িতরা আনন্দ প্রকাশ করেন। সামাজিক নেটওয়ার্কে হাজার হাজার মানুষ উদ্ধারকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্লাব উদ্ধার হওয়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে ক্যাম্পে ম্যাচ দেখার প্রস্তাব দিয়েছে এবং একটি টুর্নমেন্টে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]