
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। মঙ্গলবার ইরানের সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবি ও ইসনার বরাতে আল জাজিরা এ খবর জানায়।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ আবদুলরহিম মুসাভি দাবি করেছেন, গত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তেহরান ইসরায়েলের দিকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েনি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) আলজাজিরা ও বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
এর আগে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা ইরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে।
এরপর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ একটি বিবৃতিতে জানায়, ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এর জবাবে তেহরানে জোরালো হামলা করতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ভয়াবহ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ব্যাপক হতাহত হয়েছে।
ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলে চারবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে অন্তত চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন।
অন্যদিকে, ইরানের গিলান প্রদেশের আবাসিক ভবনে ইসরাইলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত ও কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছেন। নিহত বা আহতদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন নারী ও শিশু।
এ ছাড়া দখলদারদের হামলায় ওই এলাকার অন্তত চারটি আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]