হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানাল জাতিসংঘ
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৮
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানাল জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গাজা উপত্যকায় ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাস এবং ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
এ যুদ্ধবিরতি ও বন্দিচুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। সকল পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতিকে বহাল রাখতে এবং চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।


সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জাতিসংঘের মহাসচিব বুধবার গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তি চুক্তির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আগামী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে চলেছে।


আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, আমি মধ্যস্থতাকারীদের — মিসর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র — এই চুক্তির মধ্যস্থতায় তাদের নিবেদিত প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসা করছি। কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তাদের অটল প্রতিশ্রুতি এই অগ্রগতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমি সকল পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য এবং এই চুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হওয়াটা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।


যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের সঙ্গে এই মধ্যস্ততায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি। দোহায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ হচ্ছে ৪২ দিন। এই সময়ের মধ্যে হামাস ৩৩ জন বন্দিকে মুক্তি দিবে যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়লে হামলার সময় থেকে হামাসের হাতে আটক রয়েছে। এর পরিবর্তে ইসরায়েলও বহু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিবে।


আল-থানি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়টি বাস্তবায়িত হওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের বিস্তারিত বিষয়টি সম্পর্কে সম্মতি পাওয়া যাবে।


প্রসঙ্গত, ১৫ মাস আগে হামাসের আক্রমণের ফলে এই সংঘাত শুরুর সময় থেকেই অস্ত্রবিরতি ও বন্দিদের মুক্তির দাবি করে আসছিলেন জাতিসংঘের প্রধান। এই সংঘাত গাজার ২০ লাখেরও বেশি অধিবাসীর জন্য মারাত্মক মানবিক সংকট তৈরি করেছে।


গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।


গুতেরেস বলেন, “এই সংঘাতে যে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার প্রশমন করাই আমাদের অগ্রাধিকার। জাতিসংঘ এই চুক্তি বাস্তবায়নকে সমর্থন দিতে এবং অসংখ্য ফিলিস্তিনি যারা দুর্ভোগের শিকার তাদের জন্য মানবিক ত্রাণ বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত।”


এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ে প্রতিদিন গাজায় ৬০০ ট্রাক ভর্তি মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিধান রয়েছে। কিন্তু নানা কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব যানবাহন প্রায়শই লুট হতে দেখা গেছে। গুতেরেস বলেন, গাজাজুড়ে ত্রাণ বিতরণে “উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা” দূর করতে হবে যাতে ত্রাণ বিতরণ বৃদ্ধি করা যায়।


জাতিসংঘের এই মহাসচিব আরও বলেন, আমরা গুরুতর চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবো এটা জেনেও আমাদের পক্ষ থেকে আমরা তাই-ই করব যা মানবিক ভাবে সম্ভব। আমরা আশা করি আমাদের এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্য মানবিক সংগঠন, বেসরকারি ক্ষেত্র ও দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগও এ ধরনের প্রচেষ্টা চালাবে।


গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার বৃহত্তর লক্ষ্যের কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন ভুলে না যায়।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com