বিদ্রোহীদের হামলায় ভারতে আশ্রয় নিলো মিয়ানমারের ১৫১ সেনা
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:১২
বিদ্রোহীদের হামলায় ভারতে আশ্রয় নিলো মিয়ানমারের ১৫১ সেনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের ভারত ও চীন সীমান্ত এলাকায় জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা জোরদার করেছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। তীব্র হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়েছে ১৫১ সেনা সদস্য। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষের পর তারা ভারতে প্রবেশ করেন এবং সেখানে আসাম রাইফেলসের কাছে আশ্রয় নেন। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) মিজোরামের লংটলাই জেলার তুইসেন্টলাং সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তারা।


শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) আসাম রাইফেলসের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।


আসাম রাইফেলসের একজন কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলো একটি সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী দখল করে নেয়ার পরে কমপক্ষে ১৫১ জন মিয়ানমারের সৈন্য মিজোরামের লংটলাই জেলায় পালিয়ে এসেছেন।


এনডিটিভি বলছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির যোদ্ধারা হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে অবস্থিত সেনা ঘাঁটি দখলে নেওয়ার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এসব সদস্য অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যান এবং শুক্রবার লংটলাই জেলার তুইসেন্টল্যাং-এ আসাম রাইফেলসের কাছে আশ্রয় নেন।


আসাম রাইফেলসের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র বন্দুকযুদ্ধ চলছে। তিনি বলেন, শুক্রবার মিজোরামে প্রবেশকারী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় ছিলেন এবং আসাম রাইফেলস তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাও প্রদান করে।


তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সৈন্যরা এখন মিয়ানমার সীমান্তের কাছে লংটলাই জেলার পারভাতে আসাম রাইফেলসের নিরাপদ হেফাজতে রয়েছে।


তিনি আরও বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং কিছু দিনের মধ্যেই মিয়ানমারের সৈন্যদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।


এর আগে গত নভেম্বরে গণতন্ত্রপন্থি মিলিশিয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) মিয়ানমার-ভারত সীমান্তে বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি দখল করে নেয়ার পর মিয়ানমারের মোট ১০৪ জন সৈন্য মিজোরামে পালিয়ে এসেছিলেন।


পরে ভারতীয় বিমানবাহিনী তাদের বিমানে করে মণিপুরের মোরেতে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের নিকটতম সীমান্ত শহর তামুতে প্রবেশ করে।


মূলত ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সম্প্রতি সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। কয়েক মাস আগে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সদস্যরা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে সমন্বিত হামলা শুরু করে।


ইতোমধ্যে তারা নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে কিছু শহর ও সামরিক চৌকির দখল নিয়েছে।


অবশ্য চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিল চীন। ওই সময় উভয়পক্ষ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সংলাপ বজায় রাখতে সম্মত হয়েছিল।


তবে বিদ্রোহীদের জোট পরে এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের ‘স্বৈরাচার সরকারকে’ পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং শান্তি আলোচনা বা যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি।


এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক আগে নাগরিকদের উত্তর মিয়ানমার ছাড়ার নির্দেশ দেয় চীন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com