ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফা ধ্বংসের পর এবার উত্তর গাজার বৃহত্তম এবং একমাত্র ক্যান্সার চিকিৎসার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
২০ নভেম্বর, সোমবার বার্তাসংস্থা আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
আলজাজির প্রতিবেদনে বলা হরেছে, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে। আজ সকালে হামলার পর ইসরায়েলি ট্যাংক উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে চলে যায়।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২। এর আগে হামলায় ৮ জন নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে চিকিৎসক ও রোগীও রয়েছে।
হাসপাতালটির মেডিকেল টিম আল জাজিরাকে জানিয়েছে যে পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হাসপাতালটিতে রাতারাতি বোমা হামলা চালানো হয়েছিল।
আল শিফা হাসপাতালের ন্যায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালেও ইতিমধ্যে বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। যার ফলে বোমা বর্ষণের মধ্যেও মোবাইলের আলোতে অপারেশন করতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা।
আল জাজিরার গাজার প্রতিনিধি সাফওয়াত আল-কাহলুত হাসপাতাল্টির পরিস্থিতি দেখে বলছেন যে, মনে হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালে যা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি এই হাসপাতালে করতে চলেছে এবং ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালও দখল করবে।
এদিকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাসপাতালের দ্বিতীয় তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হাসপাতালটির স্টাফ ও অন্যান্য সদস্যরা জাতিসংঘ এবং রেড ক্রসের কাছে জরুরী সাহায্যের জন্য আবেদন করছে কারণ ইসরায়েলি বাহিনী চারপাশ ঘেরাও করে রেখেছে ও বার বার বোমাবর্ষণ করছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মারওয়ান আল-সুলতান বিবিসিকে বলেছিলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ভবন থেকে প্রায় ২০ মিটার দূরে ছিল। এর আগে তিনি বলেছিলেন, চারপাশে গুলির শব্দ শুনেছেন এবং পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ার বিভাগে হামলা করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ বিবৃতিতে হাসপাতালের কাছাকাছি তাদের অবস্থানের কথা উল্লেখ করেনি।
আইডিএফ একটি বিবৃতিতে বলেছে, সৈন্যরা গাজা উপত্যকায় তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের হামলা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো, অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম সনাক্ত করার জন্য বিমান বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। তারা আরো বলেছে, হামলায় হামাসের তিন কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
এদিকে উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক বিবিসিকে বলেছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। তবে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরে বলেছে, ১২ জন নিহত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, নিহতের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরাকে সর্বশেষ জানিয়েছেন, আমরা আশঙ্কা করছি ইসরায়েলি বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালে যা করেছিল তার পুনরাবৃত্তি করবে। পরিস্থিতি বর্তমানে বিপর্যয়কর এবং ইসরায়েলি বাহিনী আক্রমণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের কর্মীরা আহতদের চিকিৎসার দিকে জোর দিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালের অভ্যন্তরে চিকিৎসা কর্মী ও আহত ব্যক্তিসহ প্রায় ৭০০ মানুষ রয়েছেন।
উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ১৫০ জন রোগী এবং প্রায় ১০০ জন চিকিৎসাকর্মী রয়েছে। এছাড়াও ইসরায়েলি বোমা হামলায় বাস্তুচ্যুত হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিও হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]