চার বছর স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) দেশে ফিরছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতা নওয়াজ শরিফ। এজন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নওয়াজের এই ফিরে আশা দেশটিতে আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
দেশে ফেরার পর তাকে গ্রেফতারের যে ঝুঁকি ছিল, তা আপাতত নেই। তিনি সব মামলায় আগাম জামিন নিয়েছেন। তোশাখানা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে দৃশ্যত কোন ঝামেলা ছাড়াই শনিবার তিনি দেশে ফিরছেন। এজন্য সৌদি আরব থেকে বৃহস্পতিবার তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পৌঁছেছেন। সেখান থেকে শনিবার বিমানে সরাসরি চলে আসবেন পাকিস্তানে। এ কারণে দেশজুড়ে আনন্দে ভাসছেন নেতাকর্মীরা।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি বর্তমানে নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত। আর নওয়াজের প্রাথমিক প্রতিপক্ষ ও ব্যাপক জনপ্রিয় ইমরান খান এখন দিন কাটাচ্ছেন কারাগারে। খবর
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) একজন জ্যেষ্ঠ নেতা খাজা মোহাম্মদ আসিফ বলেন, এখন সময় হয়েছে উদযাপন ও আশা করার। নওয়াজের ফিরে আসাটা পাকিস্তানের অর্থনীতি ও জনগণের জন্য ভালো কিছু করতে সাহায্য করবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বেশ কয়েকদিন থেকে নওয়াজ শরীফ দুবাইয়ে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে রাজধানী ইসলামাবাদে আসবেন তিনি। এরপর যাবেন লাহোরে, যেখানে তাকে স্বাগত জানাতে সমর্থকরা আয়োজন করেছে বিশাল জনসমাবেশ।
বেশ কয়েক মাস থেকেই পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) নেতাকর্মীরা তার ফিরে আসার অপেক্ষা করছিলেন। ‘মাটির মানুষ’ হিসেবে তার ভাবমূর্তি দলের জনপ্রিয়তাকে অনেক বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মীরা।
তবে নওয়াজের বিরুদ্ধে এখনও রয়েছে দুর্নীতির মামলায় সাজা পূরণ না করার মতো অভিযোগ। এর আগে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট নওয়াজ শরীফের মঙ্গলবার পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। আর এর ফলে দেশে আসা মাত্রই তাকে গ্রেপ্তারের যে আশঙ্কা ছিল, তা দূর হয়।
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় তিনবারের নির্বাচিত এই প্রধানমন্ত্রীকে ২০১৭ সালে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং পাশাপাশি তাকে আজীবন রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে নওয়াজ শরীফ সাত বছরের সাজার মধ্যে এক বছরেরও কম সময় কারাগারে কাটান। এরপর ইমরান খান সরকারের আমলে বারংবার দেশে ফিরতে আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করেন তিনি।
তবে নওয়াজ শরীফের ভাগ্য পরিবর্তন হয় গত বছর, যখন তার ভাই শেহবাজ শরীফ ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতায় এসে শেহবাজ বেশ কিছু আইন পরিবর্তন করেন, যার মধ্যে ছিল আইনপ্রণেতাদের জন্য রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সময়ের ব্যাপ্তি পাঁচ বছরে কমিয়ে আনা।
এছাড়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মুসলিম লীগের সমঝোতার কারণেই নওয়াজ শরীফের প্রত্যাবর্তনের পথ মসৃণ হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]