
আজ রোগী দেখছিলাম চেম্বারে। একজন রোগী তার একজন শিশু সন্তান কে সাথে এনেছে। জিজ্ঞাসা করলাম দুষ্টামি করে কি না। বলল যে একেবারেই না। তাকে খাতা কলম দিলাম পরীক্ষা করার জন্য। সে খাতা কলম ধরে বসে রইলো। কিছুক্ষন পর ঘুমিয়েও গেলো। তখন আমার শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। আমি নিজে কখনো একজন দুষ্টু বাচ্চা ছিলাম না, কিন্তু দুষ্টামির সাথেই ছিলাম, সবসময়।
আমার সন্তানদের দিয়েই শুরু করি। তারা পড়ালেখায় ভীষণ ভালো ছিলো তা বলবো না, কিন্তু মোটামুটি ভালোই ছিলো। মেডিকেলে চান্স পেয়েছিলো। এক বছর পর ভালো লাগেনি বলে আমি নিজেই তাদের তাগাদা দিয়ে তাদের পছন্দের বিষয়ে পড়ালেখার ব্যবস্থা করেছি। এখন সে ভালো চাকরি করে। যখন তার কৈশোর তখন একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কোনো মেয়েকে পছন্দ কিনা। বড় জন সরাসরি বললো তার ছোট ভাই এর বান্ধবী তার কাছে ভালো লাগে। আবার একদিন গাড়ি চালাচ্ছিলাম তাদেরকে নিয়ে পাড়ার ভিতর, জিজ্ঞাসা করলাম কোন কোন গাছে কোন ফল ধরে কিনা, তারা চুরি করে পেড়েছে কিনা। বড়টার উত্তর হ্যাঁ অমুক বাসা থেকে তারা প্রায়ই ফল চুরি করে। তখন আমাদের নিজেদের শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।
প্রতিটা শৈশবেই এমন মধুর স্মৃতি থাকা উচিৎ, নয়তো জীবন পরিপুর্ণ হয়না। শুধু ফার্মের মুরগীর মতো ঘুম থেকে উঠবেন, স্কুলে যাবেন, টিভি দেখবেন, হোম ওয়ার্ক করবেন, ঘুমাবেন- পুরো একটা নিরামিষ জীবন। সব কিছু মিলিয়েই জীবন। এখানে অম্ল মধুর অভিজ্ঞতার আছে প্রয়োজন। এর মধ্যে ধর্ম থাকতে হবে, অনুভুতি থাকতে হবে, চঞ্চলতা থাকতে হবে, ভালোবাসা থাকতে হবে, সব মিলিয়েই মানুষের জীবন। আমি বিধাতার কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে দিয়ে আমার সন্তানদের কৈশোর আমার ঠিক যেমনটা চাওয়া ছিল তেমন তাই হয়েছে। আমি চাইনি আমার সন্তানরা ফার্মের মুরগী হয়ে বেস্ট ছাত্র, বেস্ট চাকরি বা বেস্ট চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমার চাওয়া ছিল ওরা ভালো মানুষ হোক। তারা সে পথেই এগোচ্ছে। ওদের জন্য দোয়া করবেন। সব সন্তানেরা ভালো মানুষ হোক।
(ফেসবুক থেকে নেয়া)
লেখক: ডা: ফেরদৌস খন্দকার, নিউইয়র্ক।
বিবার্তা/এনএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]