দীপাবলি। বানানটি ‘দীপাবলী’ বা 'দিপাবলী' নয়— প্রথমটি দীর্ঘ, পরেরটি হ্রস্ব ই-কার-যুক্ত।
শব্দটির আভিধানিক অর্থ আলোর উৎসব হলেও ব্যুৎপত্তিগত অর্থ অনেকগুলো দীপ বা প্রদীপের সমষ্টি। দীপ-এর সঙ্গে আবলি যুক্ত হয়ে ‘দীপাবলি’।
এই ‘আবলি’ কথাটি মনে রাখলেই বেশকিছু শব্দের বানান-ভুল এড়িয়ে চলা যায়। যেমন, পদ + আবলি = পদাবলি। ‘পদাবলি’ লিখতে গিয়ে দীর্ঘ ঈ-কার, নাকি হ্রস্ব ই-কার দেব, এ দ্বিধা থেকে মুক্তির জন্য এর চেয়ে সহজ উপায় আর কী হতে পারে!
'আবলি' একটি সমষ্টিবাচক বা বহুবচনবোধক শব্দ। শব্দটির অর্থ পঙ্ক্তি বা সমষ্টি। সাধারণত বস্তুবাচক, গুণবাচক বা অপ্রাণীবাচক শব্দকে বহুবচনবোধক করতে হলে শব্দের শেষে আবলি যুক্ত হয়।
কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যাক। যেমন, ‘নাম’ শব্দটি কেবল একটি নামকে বোঝায়। কিন্তু নাম + আবলি = নামাবলি— বহু নাম বা একাধিক নামকে বোঝায়। পুরোহিতেরা যে উত্তরীয় পরেন সেখানে একাধিক দেবনাম মুদ্রিত থাকে বলেই তা নামাবলি।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য আবলি-যুক্ত আরও কিছু শব্দের উদাহরণ দেখে নেয়া যাক—
গুণাবলি (গুণ + আবলি), কার্যাবলি (কার্য + আবলি), তথ্যাবলি (তথ্য + আবলি), সূত্রাবলি (সূত্র + আবলি), শব্দাবলি (শব্দ + আবলি), গ্রন্থাবলি (গ্রন্থ + আবলি), পত্রাবলি (পত্র + আবলি), রত্নাবলি (রত্ন + আবলি), দৃশ্যাবলি (দৃশ্য + আবলি), রহস্যাবলি (রহস্য + আবলি), সমস্যাবলি (সমস্যা + আবলি), নির্দেশনাবলি (নির্দেশনা + আবলি)।
সুতরাং, শর্তাবলি, রচনাবলি, নিয়মাবলি ইত্যাদি লিখতে গিয়ে দীর্ঘ ঈ-কারের ব্যবহার আমাদের আর ভাবিয়ে তুলবে না, আশা করছি।
প্রসঙ্গত, শব্দের শেষে বলি থাকলেই এবং ‘আবলি’ উচ্চারণ হলেই তাকে আবলি-যুক্ত সমষ্টিবাচক শব্দ ভেবে নেয়ার কারণ নেই। যেমন, পাঁঠাবলি— অনেকগুলো পাঁঠার সমষ্টি নয় কিন্তু।
লেখক : মজুমদার বিপ্লব, আবৃত্তিশিল্পী।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]