বছর দশেক আগের কথা একটা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ব্রান্ড এক্সিকিউটিভ নেয়ার সময় আমাকে রাখা হল নিয়োগ কমিটিতে। কারণ হল, এর কর্ণধার বেশ পরিচিত আমার। লিখিত পরীক্ষা আগেই হয়েছে.. সেখান থেকে সেরা ৬ জনের মৌখিক পরীক্ষা...ব্র্যান্ড হেড মাঝে, আমি ডানপাশে, আরেকজন খুবই বৃটিশ উচ্চারণে ইংরেজি বলা এক বাঙালি ভদ্রলোক, বসেছেন বামে। একজন একজন করে ডাকা হচ্ছে। এরা সবাই দেশ বিদেশের নামি-দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা ছেলেমেয়ে। প্রতিটি প্রশ্নেরই ভাল উত্তর দিচ্ছে.. ইংরেজিতেই প্রশ্ন হচ্ছে, আমি বাংলা ইংরেজি ব্লেন্ড করে দুই একটা কথা জিজ্ঞেস করছি। সবশেষে পাঠানো হল এক ছেলেকে। তার পোশাক এতক্ষণ যারা ছিল তাদের মত ঝকঝকে না। তার পিতা কি করেন এই প্রশ্নের জবাবে ছেলেটা বলল, পিতা বেঁচে নেই। বাঙালি ইংরেজ ভদ্রলোক আবার বলেন, কি করতেন? ছেলেটা যেই না বলল, একটা মার্কেটের দারোয়ান ছিলেন, ইংরেজ মহাশয় আর প্রশ্নই করলেন না। হেড সাহেবও দুই একটা কথা জিজ্ঞেস করে বিদায় দিলেন.. ছেলেটা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই এই পর্যন্ত এল...ভাইভাতে বাবার পরিচয়টা কত বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াল উপস্থিত থেকে দেখলাম! আমি বললাম - একজন চাকরি প্রার্থীকে বাবার পরিচয় না জিজ্ঞেস করলেই নয়?
আমি নিশ্চিত প্রতিভাবান এই ছেলে তার চলার পথে আটকে থাকেনি। কিন্তু এই দেশে পথটা কত কঠিন হয় তাদের জন্য?
(ফেসবুক থেকে নেয়া)
লেখক: সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, প্রধান সম্পাদক, গ্লোবাল টেলিভিশন।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]