শিরোনাম
একটা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অপেক্ষা
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৫০
একটা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অপেক্ষা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে এক একটা ইস্যু আসে যা নিয়ে মানুষ প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডায় নেমে পড়ে। এবং সেই ডামাডোলে একদল মানুষ সামাজিক মাধ্যমে সুইপিং কমেন্ট করা শুরু করে। এই মন্তব্যগুলো যদি শ্রেণী বিন্যাস করা হয় তাহলে দেখা যাবে একটি বিশেষ প্রবণতা। প্রচুর বানান ভুল সহযোগে বিরাট সংখ্যক মানুষের মর্ষ ও ধর্ষকামী মনমানসিকতা, খিস্তি-খেউড়, অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষা যার মূল নিশানা নারী, মুক্তচিন্তার মানুষ, মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক চিন্তাধারা, আওয়ামী লীগ, সুশীল নাগরিক সমাজ, এবং অতিসম্প্রতি বঙ্গবন্ধু প্রতীক সমূহ। প্রশ্ন হচ্ছে এরা কারা? এদের রাজনৈতিক পরিচয় যদি নাও বিবেচনা করা হয় তবে এই বিরাট সংখ্যক মানুষের একটা আইডেন্টিটি বের করা যায় অনায়াসে। এরা প্রায় সকলেই ব্যক্তিগত ভাবে ভীষণ ক্ষিপ্ত মানুষ, পারিবারিক ভাবে মমতা বর্জিত মানুষ, সামাজিক ভাবে বঞ্চিত মানুষ। এরা সবসময় বুধোকে খুঁজতে থাকে উদোর পিণ্ডি চাপানোর জন্য। দেশ-কালের এক একটা ইস্যু তাদেরকে সেই সুযোগ করে দেয়। তখন এরা হয়ে যায় লাগামহীন। যে ভাষা তারা ব্যবহার করে তা একটি সভ্য তো দূরে থাক একটা আধা বর্বর সমাজের জন্যও অচল। সমাজে যখন যে অনাচারটি ঘটে তার কার্যকারণ নিয়ে যারা গলদঘর্ম তারা এই মানসিকতার মানুষগুলোকে একদমই বিবেচনায় আনেন না। আইন-কানুন, বিধি-বিধান প্রণয়নকেই সামাজিক অনাচার বন্ধের একমাত্র মোক্ষ ভেবে নেন। অশালীন, সংস্কৃতি বোধহীন এই মানুষ সুযোগ পেলে যে অনাচারের বিরুদ্ধে বাক্যবাণ হানে তা নিজেই করতে এক পা পেছাবে না - এটা নিশ্চিত।


ষাটের দশকে মাও সে তুং চীনে একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব চালিয়েছিলেন মানুষকে আফিম আর পরচর্চার বুদঁ থেকে উদ্ধার করে কর্মমুখী করতে। চীন এখন তার ফল পাচ্ছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও একটি সংস্কৃতি মনস্ক জাতি নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। দেশে সংস্কৃতিচর্চা বলতে সারম্বরে দিবস পালন করাকে ধরে নেয়া হয়েছে। সংস্কৃতিচর্চা মানে যে কথায়, কাজে, চিন্তায় একজন মানুষ পরিশীলিতভাবে, পরিমিতিবোধ নিয়ে চলবে তা কাকে কে বোঝাবে এই দেশে? সংস্কৃতি মনস্কতাই যে মানুষকে সুনাগরিক করে তোলে আর সুনাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধি ছাড়া না যে একটি সমাজে, একটি দেশে অনাচার নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না তা কি আমাদের অজানা? আমার মাঝে মাঝে জানার ইচ্ছা হয় সুনাগরিক হওয়ার ট্রেনিংটা ঠিক কোথায় হচ্ছে? জানতে পারলে দেখতে যেতাম।


ক্রস-রেফারেন্সে ড. কাজী মোতাহার হোসেনের একটি কালজয়ী নিদান শুনেছি সম্প্রতি - "ধর্ম সাধারণ মানুষের কালচার, আর সুশিক্ষিত মানুষের ধর্ম হচ্ছে কালচার"।


তোরাব রহিমের ফেসবুক থেকে...


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com