শিরোনাম
‌‘নিজ দলের বন্ধুরা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কত কিছুই না করতে পারেন’
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৫৩
‌‘নিজ দলের বন্ধুরা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কত কিছুই না করতে পারেন’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী হলফনামায় দাখিলকৃত আমার সার্টিফিকেট সম্পর্কিত কিছু কথা ফেসবুকসহ কিছু মিডিয়ার মাধ্যমে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে।এই বিষয়ে আমি রীতিমতো স্তম্ভিত ও বিস্মিত এই ভেবে যে, নিজের দলের বন্ধুরা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কত কিই না করতে পারেন!!! যাদের সাথে একসময় কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করেছি,সময়ের আবর্তে তারা এখন কতোটা অচেনা হয়েছেন যে,রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করতে না পেরে রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করে সামাজিকভাবে তারা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন।


প্রথমেই আসি, সার্টিফিকেট ইস্যুতে। আমি নাকি অন্য একজনের সার্টিফিকেট জাল করে নিজের নামে দাখিল করেছি। আসলে, ওই সার্টিফিকেট আমি কখনোই দাখিল করিনি।আমি দাখিল না করা সত্ত্বেও তারা এটা কোথায় পেলেন তা তারাই ভালো বলতে পারবেন।আর এটি কোথা থেকে আসলো তা জানতে আমি ইতোমধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রহস্য উদঘাটিত হবে ইনশাআল্লাহ।


আর আমি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছি,তার সকল নথিপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে লিপিবদ্ধ আছে।কারো কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে,প্রয়োজনে আপনারাও খোঁজখবর নিন এবং আমার কথা যে সত্য আপনারা তার প্রমাণ পাবেন।আমি যে ক্যাম্পাসে পড়েছিলাম সেই ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেলে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস থেকে আমরা পরীক্ষা দিয়ে ডিগ্রী অর্জন করেছি।


আমি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে,আমি আমার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে কোন মিথ্যা তথ্য দেইনি। কখনো ভুল করলে তা স্বীকার করার মানসিকতা আমার আছে তবে এবিষয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন,এটা আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।আর এই ষড়যন্ত্র অবিলম্বেই শেষ হবে।তারা যেখানে যেখানে গিয়েছেন,যাদের কাছে অভিযোগ করেছেন,আমি সেইসকল যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই সত্য বিষয়টি সকলের সামনে আনবো এবং এই অপপ্রচার বন্ধ করবো ইনশাআল্লাহ।


ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করছি। ক্লাসের সেরা ছাত্র কখনো না থাকলেও মনের মধ্যে প্রবল আকাঙ্খা ছিল উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার। সেই আশা থেকেই আপনাদের দোয়ায় আমি আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছিলাম।


এখন বুঝতে পারছি,আমার এই উচ্চ শিক্ষা অর্জন করাই হয়তো কারো কারো প্রতিহিংসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ, যদি নির্বাচন করতে বা দলীয় পদ-পদবী পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা আবশ্যিক হতো তাহলে হয়তো বুঝতাম,এখানে রাজনীতির হিসাব আছে।তবে এখন পর্যন্ত এসবের কিছুই না থাকলেও একমাত্র প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই আমার বিজ্ঞ রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কতো রকমই অপচেষ্টাই না করছেন!!!
প্রতিহিংসায় পড়ে হয়তো আপনি ভুলেই গিয়েছেন যে, আপনি যখন সংসদ নির্বাচন করেছেন তখন আপনার বিজয়ের জন্য আমরাও কাজ করেছিলাম।


দলীয় বন্ধু হিসেবে আপনার সাথে একসময় সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম।আপনারা যারা যারা আজ আমাকে নিয়ে প্রতিহিংসায় মেতেছেন,আপনাদের সাথে একসাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি,এটা ভাবতে আমার অবাক লাগছে।ছাত্রলীগ,যুবলীগের দায়িত্ব শেষে নেত্রী আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমি ব্যক্তি নিলু খান কোন বিষয় না।কিন্তু আপনি স্বীকার করুন আর না করুন, বর্তমানের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিলু খান আপনার সহযোদ্ধা,আপনার রাজনৈতিক সহকর্মী।আমি সবসময় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি,আপনি/আপনারা আমার সহযোদ্ধা,আমার বন্ধুজন,এটা মাথায় রেখেই রাজনীতিটা করছি আর বাকী জীবন করতে চাই,তবে আমার এই সুস্থ-সুন্দর মানসিকতাকে আমার দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবেন।


যেহেতু আপনারা আমার মতো এমন চিন্তা করেন না-তাহলে কি আমি ভাববো না যে,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে অপদস্ত করা গেলে আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে।আপনারা তাহলে আওয়ামী লীগকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান,জননেত্রী শেখ হাসিনার পছন্দ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলতে চান।তবে আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি,নড়াইলের মানুষ সাক্ষী আছেন,আমি জীবনে কখনো জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি।তবে আপনি/আপনারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েছেন,তা দেশবাসী জানে।আর আমি সবসময় জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে চলি এটাই হয়তো আমাকে অপছন্দ করার সবচেয়ে বড় কারণ।এমন কথা কেন বলছি,কারণ-এই আপনারাই আমাকে হারানোর জন্য আমার প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আমাকে হারিয়ে দিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে জিতিয়েছেন শুধুমাত্র প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে।


এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হলেও আপনারাই নৌকার বিপরীতে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে আমাকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে সকলের দোয়ায় আর আমার নেত্রীর আশীর্বাদে আমিই উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি।এর আগে নড়াইলের মানুষের ভালোবাসায় আমি পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি।


বন্ধু,আমার সাথে রাজনীতির ময়দানে রাজনীতি করেন,কোন সমস্যা নাই। তবে ষড়যন্ত্র করার আগে একটিবার ভেবে নিন রাজনীতির বাইরেও আমাদের একটা জীবন আছে।আমাদের পরিবার-পরিজন আছে,তাদের একটা সম্মান আছে। একটা মিথ্যা দশবার বললে সেটা একজন হলেও বিশ্বাস করে নেয়।যারা এই মিথ্যা ইস্যুটি বিশ্বাস করে আমার সন্তানকে তার বাবার বিষয়ে আঙ্গুল তুলবে তখন আমার সন্তানকে আমি কি জবাব দিবো।জননেত্রী শেখ হাসিনার কথা সারাজীবন অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি কি এই প্রতিদান পাওয়ার জন্য,যে একটা মিথ্যা ইস্যু নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে সামাজিকভাবে অপদস্ত করা হবে?


এতোটা নোংরামি আমার দলীয় বন্ধুরা আমার সাথে করবেন,তা স্বপ্নেও চিন্তা করিনি কখনো। তবে বন্ধু, একটা কথা মাথায় রাখা দরকার,আমাদের কারোরই এমন পরিবেশ তৈরী করা উচিত নয় যাতে আগামীতে আর এক টেবিলে মুখোমুখি বসার পরিবেশ না থাকে।এক টেবিলে বসার মতো পরিবেশ রেখে রাজনীতি করা উচিত।


রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা যখন কোন রাজনৈতিক কর্মী হারিয়ে ফেলেন,তখন তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে শুরু করেন।এটা তাদের রাজনৈতিক দৈনতার বহিঃপ্রকাশ।


সম্মানিত নড়াইলবাসী, আপনারা দেখেছেন,কিভাবে জেল-জুলুম, হুলিয়া, অত্যাচার সহ্য করে আজকের এই দিনে এসেছি।আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি, আমার নেত্রীর প্রতি আস্থা রাখায় মহান আল্লাহর রহমতে বারবার নানাভাবে আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।আর এমন বহু ষড়যন্ত্র পেরিয়েই আজকের এই অবস্থানে এসেছি। তাই এসব নিয়ে কখনোই ভীত বা শঙ্কিত ছিলাম না,আজও নেই।তবে কষ্ট লাগে যখন দেখি আমার দলেরই কোন বন্ধু/বন্ধুরা আমাকে নিয়ে নোংরা ষড়যন্ত্র করে।


বন্ধু,রাজনীতি করতে আসলে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে।আমার বিষয়ে কিছু জানার থাকলে আমাদের দলীয় ফোরামে আলোচনা করা যেতো।আর সবশেষ তো আমাদের নেত্রী আছেন,আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে নেত্রীর কাছে করা যেতো।তবে ফেসবুকসহ যেভাবে মিডিয়ায় মিডিয়ায় খবর দিয়ে আমাকে অপদস্ত করার অপচেষ্টা চলছে,তা কখনোই আপনাদের কাছ থেকে আমি/আমরা আশা করিনি।


আমার আশা ছিল,আপনি/আপনারা আপনাদের স্বীয় ক্ষমতাবলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আমাদের নড়াইলের শিক্ষার মানোন্নয়নের আবেদন দিবেন। তবে সেটি না করে,আপনাদের আবেদনের বিষয় আজ আমি!!!


আপনি/আপনারা যেভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আমাকে অপদস্ত করার,আমিও আমার বিরুদ্ধে আনীত এই অভিযোগ যে মিথ্যা তা উপযুক্ত প্রমাণাদি নিয়ে প্রমাণ করছি ইনশাআল্লাহ।তবে প্রশ্ন হলো,আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আপনারা কি আমার ও আমার পরিবারের এই সাময়িক সম্মানহানী ফিরিয়ে দিতে পারবেন?বাবার জন্য আমার সন্তানের এই দুশ্চিন্তা,মানসিক যন্ত্রণার বিপরীতে তার প্রতিদিনের শান্তিপূর্ণ মুহূর্ত ফিরিয়ে দিতে পারবেন???পারবেন না বন্ধু, পারবেন না।
বন্ধু,আমরা নড়াইলের বাসিন্দা হিসেবে সবাই কম-বেশি সবার খুটিনাটি বিষয় জানি। থুথু উপরের দিকে ফেললে গায়ের উপর পড়ে এই কথা ভেবে, প্রতিহিংসাপরায়ণ লোক হওয়া সত্ত্বেও দলীয় সহযোদ্ধা হিসেবে আপনাদের বিষয়ে অনেককিছু জানলেও কারো কাছে কিছুই বলতে চাই না।তবে আমার রাজনৈতিক শিষ্টাচারকে,কখনোই আমার দুর্বলতা ভাববেন না।তাই আসুন,এমন নোংরামি-এমন কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নড়াইলের মাটিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ করি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।


(মোঃ নিজামউদ্দিন খান নিলুর ফেসবুক থেকে, সাধারণ সম্পাদক- নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগ ও চেয়ারম্যান সদর উপজেলা পরিষদ নড়াইল​)


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com