পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে’। এটাই সত্যি, এটাই বাস্তবতা, নেই কোন তর্ক বির্তক।
নিচের দু'টি ছবিতেই রয়েছেন তিনজন মানুষ তবে অতি কষ্টের, দুঃখের বিষয় যাকে নিয়ে বা কেন্দ্র করে এ হাসিখুশি, মায়া মমতা, আদর, ভালোবাসায় গড়া সুখী জগতসংসার, সেই প্রিয় মানুষ মোঃ হাসিবুর রহমান হাসিব ভাই, কারো প্রিয় বাবা, কারো স্বামী, করো ভাই, কারো ছেলে, কারো প্রিয় কলিগ, কারো বন্ধু আজ আর আমাদের মাঝে নেই,(ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
১২ বছর পূর্বে যার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর ফেনী শাখার মাধ্যমে। বিগত ১২ বছর যাবত শ্রম, মেধা সর্বোপরি দায়িত্ব পালনের মধ্যে দিয়েই জীবনকেও বিসর্জন দিলেন প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে ভালোবেসে।
বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান দিয়েছেন সুখী একটি পরিবার গঠনের সকল আর্থিক সহায়তা, দিয়েছেন সন্তানদের ভবিষ্যতের আবাসন ব্যবস্থা (স্টাফ গৃহ ঋণের মাধ্যমে)।বেতন বোনাসে চলছিল সুখী এ পরিবারের সাদাসিধা জীবন যাপন।
ব্যাংক দিয়েছেন গৃহ নির্মাণ ঋণ৷ তৈরি হয়েছে সন্তানদের আবাসন। হঠাৎ করোনা ভাইরাসের নিষ্ঠুর ছোবল ছিন্নভিন্ন করেছে স্ত্রী ও সন্তান, মা ও বাবা, ভাই ও বোনদের মত অগুনিত শুভাকাঙ্ক্ষীদের হৃদয়কে।
ঋনের বোঝা নিয়ে প্রতিনিয়ত ছুটেছিলেন নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়ে। কিন্তু সব সাজানো গুঁজানো পরিকল্পনায় আঘাত হানে করোনাভাইরাসের মত নিষ্ঠুর আক্রমণ। কেঁড়ে নিলেন সংসারের মূল চালিকাশক্তির প্রাণ। সব যেন স্তব্ধ হয়ে গেল নিমিষেই। অজানা, অচেনা, অদূর ভবিষ্যতের পানে তাকিয়ে আছে কতগুলো জীবন। কি হবে কিছু জানেনা অবুঝ দুটি সন্তানের ‘মা’। এমনিতেই স্বামী হারানো বেদনা, আর এক দিকে অবুঝ সন্তানদের ভবিষ্যত। তারউপর রয়েছে ঋণের বোঝা.......
প্রশ্নঃ-
১.কারো কি সামর্থ্য আছে অবুঝ সন্তানদের মুখে হাসি ফোঁটানো?
২.কারো কি সামর্থ্য আছে বাবার স্বাদ পূর্ণ করবেন?
৩.কারো কি সামর্থ্য আছে স্ত্রী মেয়ে ছেলের ছোট ছোট দাবী পূরণ করবেন?
৪. আরো কত কি না বলা, না জানা দাবী, অভিযোগ, আবদার, মায়া, ভালোবাসা.... …….
তাছাড়া
এখন কে পরিশোধ করবেন স্টাফ গৃহ ঋণের বোঝা?
উত্তরঃ- হয়তো ১ থেকে ৪ প্রশ্নের উত্তর এ ধরণীতে / পৃথিবীতে কেবল বাবার স্বাদ বাবাই দিতে পারেন এটাই সত্যি।
তবে স্টাফ গৃহ ঋণের বোঝা পরিশোধের ব্যবস্থা, ব্যাংক চাইলেই এ অবুঝ ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের শেষ আশ্রয়স্থল ‘মা’ এর কর্মসংস্থান এর মাধ্যমে সম্ভব।
আমার কিছু ব্যক্তিগত প্রস্তাব:
১. যেহেতু হাসিব ভাই জিপিএফ ভুক্ত নন, তাই দ্রুত জিপিএফ অনুমোদন করতঃ বিশেষ ব্যবস্থায় এ শহীদী মৃত্যু বরণকারী ভাইকে এ সুযোগের আওতাভুক্ত করা।
২. স্টাফ গৃহ ঋণের সুদ ও আসল মওকুফ করা।
৩. মাস্টার্স পাস স্ত্রীকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অবুঝ ছেলে মেয়ে শেষ অবলম্বন কে স্বাবলম্বী করা।
৪. সন্তানদের শিক্ষা ও চিকিৎসার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
৫. যেহেতু-
এক. জিপিএফ এর নীতিগত অনুমোদন আছে,
দুই. সোনালী ব্যাংক অনুমোদন করেছে,
তিন. রূপালী ব্যাংক এর কর্মকর্তাগণ ইতিমধ্যেই আওতাভুক্ত হয়েছে,
চার. অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ও অনুমোদন এর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, তাহলে কেন এখনো জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবী পূরণে বিলম্ব করছেন?
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সবাইকে বলবো এ ছবি দু'টির দিকে তাকিয়ে এবং আরো অপেক্ষমান রয়েছে এ রকম অনেক ছবি সে বিবেচনায়, কালক্ষেপণ না করে হাসিব ভাই কে অন্তর্ভুক্ত করে জিপিএফ অনুমোদন অতি দ্রুতই সম্পন্ন করার বিনীত অনুরোধ করছি ।
এটা আজ আমাদের সকলের প্রাণের দাবী। দেশের উন্নয়নে ব্যাংক, ব্যাংকের উন্নয়নে কর্মকর্তা ও কর্মচারী। কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই প্রতিষ্ঠানের প্রাণ।প্রাণবিহীন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই।
প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব রক্ষার্থে দ্বৈত নীতি পরিহার করে জিপিএফ অনুমোদনের মাধ্যমে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবী পূরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি একান্তই কাম্য।
(ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মিজানুর রহমানের ফেসবুক থেকে নেয়া)
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]