দেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির (আইপি) অনুমতি দেয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চারদিনে ১৬'শ ৩৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২০-২৫ টাকা। আমদানি অব্যাহত থাকলে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানান আমদানিকারকরা।
৯ জুন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকালে হিলি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজ সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে দেশি পেঁয়াজের। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা। গত ৫ জুন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় আজ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৮-৬০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি ৩৬-৩৮ টাকা।
হিলি কাস্টমসের তথ্য মতে, সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ার প্রথম দিন গত সোমবার (৫ জুন) তিনটি ট্রাকে ৬০ মে.টন, দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ৪২ ট্রাকে ৮৮৯ মে.টন ও তৃতীয় দিন বুধবার ১৩ ট্রাকে ২'শ ৬০ মে.টন, চতুর্থ দিন ১৪ ট্রাকে ৪২৪ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ কিনেছি ৮৫ টাকা কেজি। আজ সেই পেঁয়াজ কিনলাম ৬০ টাকা কেজি। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকা কেজি। কোরবানি ঈদের পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে। কারণ এই ঈদে পেঁয়াজ সব পরিবারেই বেশি লাগে।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মইনুল হোসেন ও ফেরদৌস রহমান বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ফলে চারদিনের ব্যবধানে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২০-২৫ টাকা। চারদিন আগে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি করেছি ৮০-৮৫ টাকা কেজি আজ শুক্রবার সেই পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬০ টাকা কেজি। অন্যদিকে ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৩৬-৩৮ টাকা। পেঁয়াজের দাম যখন বেশি ছিল বেচাবিক্রি তখন বেশি ছিল। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কমেছে সাথে বেচাবিক্রিও কমেছে। ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই বেশি দামে দেশি পেঁয়াজ কিনে ধরা খাওয়া। এতে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং আমাদের বেচাবিক্রি বেড়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সেলিম উদ্দীন বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। প্রকারভেদে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমে যাবে। আশা করছি, কোরবানির ঈদের আগে ৩০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।
বন্দরের আরেক পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর কারণেই দেশি পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় তারা এই সুযোগ নিয়েছিল। ভারত পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলে বাজারে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশা করছি।
হিলি বন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ বলেন, গত সোমবার (৫ জুন) থেকে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পর্যন্ত হিলি বন্দর দিয়ে চার দিনে ভারত থেকে ৭২ ট্রাকে ১৬'শ ৩৩ মে.টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
বিবার্তা/রাব্বানী/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]