শিরোনাম
রাবিতে ‘দহন’ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন, হামলা
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫০
রাবিতে ‘দহন’ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন, হামলা
রাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে বাণিজ্যিক সিনেমা ‘দহন’ বন্ধের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও কর্তব্যরত সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকালে মিলনায়তনের ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্যবসাভিত্তিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার বাণিজ্যিক সিনেমা ‘দহন’ বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শন করার কথা ছিল। কিন্তু তা ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। এছাড়া বহিরাগতদের আগমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটে। সেজন্য দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধের দাবিতে মিলনায়তনের সামনে অবস্থান নেন। প্রক্টর তাদের অবস্থান থেকে সরে যেতে বলে।


এক পর্যায়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানে সাথে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের গায়ে হাত তুলেছে এমন অভিযোগ তুলে তারা আন্দোলকারীদের মারতে শুরু করে। এ সময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদেররও মারধর করে তারা।


এ ঘটনায় সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।


মারধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন- রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুস হৃদয়, রাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক মহব্বত হোসেন মিলন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিল হোসেন, প্রচার সম্পাদক মিঠুন চন্দ্র মোহন্ত, ছাত্র ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ইসরাফিল, কর্মী রাশেদ রিমন, কর্মী আশরাফুল আলম। এদের মধ্যে মিঠুনের হাত ভেঙ্গে গেছে।


হামলারীরারা হলো- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুন জামিল সুস্ময়, ইমরান খান নাহিদ, মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক ফেরদৌস মাহমুদ শ্রাবণ, কর্মী শেখ সিয়াম, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজাসহ বহিরাগত বেশ কয়েকজন।


মারধরের বিষয়ে শাকিলা খাতুন বলেন, 'ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুনুর নির্দেশেই আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। প্রক্টর সেখানে উপস্থিত থাকলেও সে এগিয়ে আসেননি। তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন! মারধরকারীদের ঠেকাতে গেলে তারা এক সাংবাদিককেও মেরেছে।’


সাংবাদিক হৃদয় বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করতে দেখে আমি তাদের আটকাতে যাই। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকলেও সুস্ময় আমাকে লাথি মারে।’


এ ব্যাপারে রাবি প্রক্টর বলেন, শিক্ষার্থীরা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল আমি গিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়ে সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করি।


সাংবাদিকসহ সাতজনকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার সামনে মারধর ঘটেনি, তাই বলতে পারি না।'


বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত বাম সংগঠনসহ মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষার্থীরা সিনেমাটি প্রদর্শন করতে দেয়নি। তারা প্রক্টরকে লাঞ্ছিত করতে চাইলে আমরা তার প্রতিবাদ করি।


সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আসলে সাংবাদিককে মারধরের কোনো ইচ্ছা থেকে এই ঘটনা ঘটেনি। হয়তো ধস্তাধস্তির সময়ে আঘাত লাগতে পারে।'


বিবার্তা/পাভেল/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com