শিরোনাম
জাবিতে ৬ শিক্ষককে পিটিয়েছে ভিসিপন্থী শিক্ষকেরা
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৩৯
জাবিতে ৬ শিক্ষককে পিটিয়েছে ভিসিপন্থী শিক্ষকেরা
সাভার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের’ ছয় শিক্ষককে পিটিয়ে জখম করেছে ভিসিপন্থী শিক্ষকরা। এঘটনায় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।


মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল ট্রান্সপোর্টে এঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষকদের সাভারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আমির হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট, স্ট্যাটিটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ধর্মঘট চলাকালীন মঙ্গলবার ভোরে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা টান্সপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাড়ি ছাড়তে বাধা দেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জুলকার নাইনের নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পিটিয়ে আহত করে ভিসিপন্থী শিক্ষকরা।


অপরদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা সকালে উপাচার্য প্রফেসর ড. ফারজানা ইসলামের অফিস অবরোধ করে রাখে। কর্মসুচির অংশ হিসেবে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা সকল ক্লাস-পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন।


বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের শিক্ষকরা জানান, বর্তমান উপাচার্য গত ১১ এপ্রিল বুধবার অফিস সময়ের পরে এক চিঠিতে ৯ জন প্রভোস্টকে অব্যাহতি দিয়েছেন যা নজিরবিহীন, অ্যাক্টবিরোধী ও শিষ্টাচার বহির্ভূত।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট এর বিধি (১০) অনুযায়ী, শুধু সিন্ডিকেটই প্রভোস্ট নিয়োগ ও অব্যাহতি দিতে পারে, আর কেউ নয়। এই বিধি অনুযায়ী উপাচার্যের প্রভোস্ট নিয়োগ বা অব্যাহতি দেয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।


আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অভিযোগ, অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রভোস্টদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মো. শাহেদুর রশিদ ছিলেন প্রভোস্ট ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের বিধি- ২২ (৩) অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ এবং সাকসেসর না আসা পর্যন্ত তিনি সিন্ডিকেট সদস্য থাকবেন। সিন্ডিকেটের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রভোস্ট থাকবেন এটাই রীতি। কিন্তু উপাচার্য নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্যকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এর আগেও উপাচার্য নির্বাচিত ডিনকে অব্যাহতি দিয়েছেন। যা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের পরিপন্থী বলে মনে করছেন তারা।


আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা আরো জানান, ১৯৮৪ সালে প্রণীত ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্মপরিচালনা বিধির ১ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, সাধারণত প্রতিমাসে সিন্ডিকেটের একটি নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। এবং ২ ধারায় বলা হয়েছে, কোন সভায় উপাচার্য অনুপস্থিত থাকলে সিন্ডিকেট উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে থেকে একজনকে সভাপতি নির্ধারিত করবেন। এই দুই ধারায় নিয়মিত সিন্ডিকেট অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। অথচ উপাচার্য দীর্ঘদিন ধরে কোনো সিন্ডিকেট ডাকেননি এবং গত ১২ এপ্রিল তারিখে ৩০৩ তম সভা আহ্বান করে সম্মানিত সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দকে চিঠি প্রদান করেও হীন স্বার্থ চরিতার্থের উদ্দেশ্যে আহুত সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করেন। এই সুযোগে অবৈধভাবে অ্যাক্ট ও বিধি লঙ্ঘন করে হলসহ বিভিন্ন পদে সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত শিক্ষকগণকে অব্যাহতি দিয়ে উপাচার্যের আজ্ঞাবহ শিক্ষকগণকে পদায়ন এবং সিন্ডিকেটে কর্তৃত্ব স্থাপনের অপচেষ্টা করছেন বলে মনে করছেন তারা।


বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট, স্ট্যাটিটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদে সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসুচি পালন করছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা। এছাড়া ধর্মঘট পরবর্তী কর্মসুচি আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।


বিবার্তা/শরিফুল/নুর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com