
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলন কেন্দ্র করে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা অনুষ্ঠিত হয়নি। এর ফলে মঙ্গলবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাড়ে চারঘন্টা আলোচনার পরে যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছিলো তার কিছুই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সাংবাদিকদের সাথে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. সোনিয়া সেহেলী বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের হাতে চলে যাবে; আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব আর আমাদের হাতে থাকবে না। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভার জন্য লিখিত ডকুমেন্ট প্রয়োজন। এজন্য শিক্ষার্থীদের দাবি এবং আমাদের পক্ষের দাবি নিয়ে একটি যৌথ ডকুমেন্ট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের বারবার ডাকলেও তারা আসেনি। ফলে ডকুমেন্ট তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় উপাচার্যের পক্ষে ডকুমেন্ট ছাড়া সিন্ডিকেট সভা করা সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক বলেন, 'সিন্ডিকেট মিটিংয়ের জন্য একটি লিখিত ডকুমেন্ট প্রয়োজন। সেটির জন্যই শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা কেবল কালক্ষেপণ করেছে এবং একঘন্টা যাবত তাদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার পরেও তারা আসেননি। এই পরিস্থিতে আমরা উপাচার্যের কাছে যৌথ বিবৃতি দিতে পারিনি। এখন যদি শিক্ষার্থীরা কোনো কর্মসূচিতে যান এবং ভাংচুর বা এরকম কিছু করেন সেক্ষেত্রে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন তদারকি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ তাই স্থানীয় প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখবেন।'
এ বিষয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, 'গতকাল আমরা ৬১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেছি। এরপরেও আজকে তারা আমাদের মাত্র ৫ জনকে যৌথ বিবৃতির জন্য যেতে বলেছেন। গতকালের দীর্ঘ আলোচনায় আমাদের দাবি ও সিদ্ধান্ত সবই আমরা উল্লেখ করেছি এবং আমাদের স্বাক্ষর ও দিয়েছি। এতকিছুর পরেও কেন আবার ৫জনকে লিখিত দিতে হবে এটাই বোধগম্য নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'গতকালের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো যে আজকে দুপুর ১২ টার মধ্যে উপাচার্য হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের প্রশাসনিক এবং শিক্ষাগত কোনো হয়রানি করা হবে না- এই মর্মে তিনি লিখিত নথি প্রকাশ করবেন। কিন্তু এর কিছুই হয় নি। শিক্ষকবৃন্দ আমাদের কোনোরকম সহযোগিতা করছেন না। আমাদের একক ডিগ্রির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত এখনও পাই নি। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে সেটা নিয়ে অনুষদের সকলের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
প্রসঙ্গত, গত রোববার (৩১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভাকে কেন্দ্র করে সভাস্থলে তালা লাগিয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা। রাত ৮টার দিকে বহিরাগতরা এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে এবং শিক্ষকরা তালা ভেঙে বের হয়ে আসেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। তবে সেই ঘোষণা প্রত্যাখান করে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
বিবার্তা/আমান/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]