কুবির আবাসিক হল থেকে ব্যবহৃত বুলেট উদ্ধার
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২০:৩১
কুবির আবাসিক হল থেকে ব্যবহৃত বুলেট উদ্ধার
কুবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কাজী নজরুল ইসলাম হলের ৩০৭ নং রুম থেকে গাঁজা ও বেশ কয়েকটি ব্যবহৃত বুলেট উদ্ধার করেছে হল প্রশাসন। পরবর্তীতে কক্ষটি সিল গালা করে দেওয়া হয়।


গতকাল ২৮ জুলাই (সোমবার) রাত সাড়ে দশটার দিকে অভিযান চালিয়ে এগুলো উদ্ধার করেছেন বলে নিশ্চিত করেন হলের প্রাধ্যক্ষ ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ হারুন।


হল প্রাধ্যক্ষ ও অভিযুক্তদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত সাড়ে দশটার দিকে হলের বিভিন্ন রুমে তল্লাশির সময় তথ্য পেয়ে ৩০৭ নং রুমে তল্লাশি চালায়। তবে প্রথম দিকে রুমে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ৩০৭ নং রুমের জানালা বরাবর নিচে ড্রেন থেকে কিছু গাঁজা উদ্ধার করে প্রাধ্যক্ষকে অবগত করে হলের কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী। পরে রুমে অবস্থানরতদের জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্নতা পরিলক্ষ্য হওয়ায় তাদেরকে ডোপ টেস্টের জন্য শহরের হাসপাতালে প্রেরণ করে। সে মুহূর্তে হল প্রাধ্যক্ষের সাথে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান রাহাত।


পরবর্তীতে অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে রুমে তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে অভিযুক্ত ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের এমবিএ ২০২৩-২৪ বর্ষের রবিউল আলম রবিনের টেবিল থেকে কিছু ব্যবহৃত বুলেট পাওয়া যায়।


অভিযানের সময় রবিউল আলম রবিনসহ ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের এমবিএ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সবুজ মিয়া এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এমবিএ একই বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ উদ্দিন আহমেদ রুমে অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে সবুজ মিয়া শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।


এদিকে আরেক অভিযুক্ত সাঈদ উদ্দিন আহমেদকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় আটক করে প্রক্টোরিয়াল বডি। এরপর গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, একবছর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ও আবাসিক হলে অবস্থানের উপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও তিনি হলে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন বলে জানা যায়।


এনিয়ে অভিযুক্ত সবুজ মিয়া বলেন, 'আমি দত্ত হলে থাকি। সামনে আমাদের পরীক্ষা, পড়াশোনার করার জন্য রবিনের রুমে আসি। একটু পরেই প্রভোস্ট স্যার আসেন। প্রথম অবস্থায় রুমে সার্চ করে আমাদের কাছে কিছুই পাইনি। রুমের বাহিরে ড্রেনে কিছু মাদক পেয়েছে, সেজন্য আমাদেরকে সন্দেহ করে ডোপ টেস্টের জন্য শহরে পাঠায়৷ আমি কোন মাদক সেবন করিনি, সেজন্য ডোপ টেস্ট করাতে কোন আপত্তিও ছিল না। এরপর শহরে থাকা অবস্থায় শুনতে পায় ঐ রুম থেকে নাকি উনারা ব্যবহৃত বুলেট পেয়েছে।'


যার টেবিল থেকে বুলেট পাওয়া গিয়েছে অভিযুক্ত রবিউল আলম রবিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমি এবিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। প্রশাসনের কাছেই সরাসরি সবকিছু বলব।'


আরেক অভিযুক্ত সাঈদ উদ্দিন আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


ঘটনার সময় উপস্থিত সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, ' আমি পুরো ঘটনার সময় ছিলাম না। মাঝখানের সময়টায় ছিলাম। আমাকে ফোন দিলে গিয়ে শুনি গাঁজা পাওয়া গিয়েছে। সেটাও রুমের বরাবর জানালার নিচে থেকে। তারপর কথাবার্তায় তারা একটু অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিল। তখন হলে বাকি শিক্ষার্থীরা দাবি করলো ডোপ টেস্ট করানোর জন্য। সেজন্য আমরা তাদের শহরে পাঠিয়েছিলাম। এরপর আমি চলে এসেছি। পরবর্তীতে আরো কি কি পাওয়া গিয়েছে সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।


বহিষ্কৃত হয়েও সাঈদ উদ্দিনের হলে অবস্থানের বিষয়ে নজরুল হলের প্রাধ্যক্ষ মো: হারুন বলেন, ঐ রুমে যারা ছিল তাদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যেন সাঈদ রুসে থাকতে না পারে। এমনও বলা হয়েছে, যদি ওই ছেলে থাকে, তাহলে বাকিদেরকে হল থেকে বহিষ্কার করা করা হবে। তারপরেও তাকে রুমে রেখেছে। আমরা এটা নিয়েও ব্যবস্থা নিব।


ঘটনার সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রেখেছি। এই ঘটনার পর রুমটিকে সিলগালা করা হয়েছে। আমাদের হল প্রশাসন একটি মিটিং করে এবিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিকে অবগত করব। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।


বিবার্তা/প্রসেনজিত/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com