ফোন না ধরায় কুবি কর্মচারীকে ছাত্রদল নেতার মারধর
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০:১৪
ফোন না ধরায় কুবি কর্মচারীকে ছাত্রদল নেতার মারধর
কুবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের কার্য-সহকারী পদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক কর্মচারীকে মারধর করেছে কুবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মেহেদী হাসান সোহাগ।


গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মারধরের ঘটনাটি ঘটে। শুরুতে জানাজানি না হলেও পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এছাড়া মারধরের বিষয়টি মুঠোফোনে প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন অভিযুক্ত মেহেদী হাসান সোহাগ।


জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান ভুক্তভোগীকে ফোন দিয়ে দেখা করতে চান, কিন্তু তিনি কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখা করতে পারেননি, পরবর্তীতে ফোনও রিসিভ করেননি। এজন্য বিকেলে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে মেহেদী হাসান তাকে মারধর করেন।


অভিযুক্ত মেহেদী হাসান সোহাগ কুবি শাখা ছাত্রদলের ২০২১ সালে ঘোষিত কমিটির সাত নং যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি আইএফআইসি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ভুক্তভোগী কর্মচারীর নাম আজাদ। গত ৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) তার কর্মস্থলে যোগদানের দিন ছিল এবং ওই দিনই তিনি মারধরের স্বীকার হন।


এ নিয়ে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, ‘যেই নিয়োগটি হয়েছে সেই নিয়োগে অন্য একটা পদে আমিও ক্যান্ডিডেট ছিলাম। ঘটনার দিন সকালে জানতে পারি, ওই নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বা অর্থের বিনিময়ে হয়েছে—যেটি আমি যাচাই করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য আমি তাকে (আজাদ) ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলি। সে বারবার বলছিল ‘আসছি’, কিন্তু পরে ফোন বন্ধ করে দেয়। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে রেজিস্ট্রার অফিসে তার সঙ্গে দেখা হলে, আমাকে মিথ্যা বলার কারণে রাগের মাথায় আমি তাকে একটি থাপ্পড় দিয়ে ফেলি। পরবর্তীতে অফিস থেকে বের হলে তার সাথে দেখা করে আবার বিষয়টি বুঝিয়ে বলি।’


তবে ভুক্তভোগী আজাদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে এখানে অনেকদিন চাকরি করতে হবে ভাই। আমি এই এলাকার কারোর বিরুদ্ধে এই ঘটনায় বক্তব্য দিতে পারব না বলে ফোন কেটে দেন।


তবে এই ঘটনার দিন কুবি ছাত্রদলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে এই ঘটনার সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান আবুল বাশার।


তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাস সংলগ্ন এটিএম বুথের সামনে এক কর্মচারী ও এক শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা দেখে আমি থামানোর চেষ্টা করি। পাশে একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন, পরে শুনলাম তার নাম আজাদ। তবে আমি তাকে চিনি না, তাই কে কাকে মারধর করেছে সেটা সঠিকভাবে শনাক্ত করার সুযোগ আমার ছিল না।'


এই ব্যাপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, 'মারধরের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নিয়ে নিব।'


এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আগামী রবিবার একটি মিটিংয়ে বসবো। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'


বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সে সদ্য যোগদান করেছে। শুনেছি, কেউ একজন এসে তার সঙ্গে এমন আচরণ করেছে—বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, কে মারধর করেছে তার পরিচয়সহ একটি লিখিত অভিযোগ প্রক্টর অফিসে জমা দিতে। অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তদন্ত করবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তাই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, তার আগে অবশ্যই কারও না কারও পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে হবে।’


বিবার্তা/প্রসেনজিত/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com