শিক্ষা
গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ আদায়ে মামলা লড়ছে জবি
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ২২:৪৩
গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ আদায়ে মামলা লড়ছে জবি
জবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ধুপখোলা বাজারে সংস্কার কাজ চলাকালীন সময়ে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওন মৃত্যুবরণ করেন৷ এঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী শাওনের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে আইনি সহায়তা দিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আইনজীবী নিয়োগ থেকে শুরু করে মামলার যাবতীয় খরচ বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


৩ আগস্ট, বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক জবি প্রেসক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এসব তথ্য জানান।


উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক জানান, আমরা শাওনের ব্যাপারে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছি। মামলার এখন রুলিং ও হয়েছে। রুলিংয়ের ব্যাপারে এখন যা যা করা দরকার তা আমরা করবো। তার বাবা শুধু স্বাক্ষর করেছে। আমাদের ছাত্র আমরা সবসময় সাপোর্ট করবো।


এর আগে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) মেহেদী হাসান শাওনের পরিবারের ক্ষতিপূরণ নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। শাওনের পরিবারকে ১২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ক্ষতিপূরণ দিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে যাদের বা যে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এ বিস্ফোরণ ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও আরএফএলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।


শাওনের পরিবারকে হাইকোর্টে রিট আবেদন, মামলা পরিচালনা থেকে শুরু করে সবরকম আইনি সহায়তা প্রদান করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মামলা পরিচালনার সব খরচও বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থীর পক্ষে মামলার সব ব্যয় নির্বাহ করছে এ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।


শাওনের বাবা আব্দুল লতিফের রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানেল আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।


আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, রুল জারির পাশাপাশি হাইকোর্ট দুটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন। প্রথমটি হলো- কার বা কাদের অবহেলায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা অনুসন্ধান করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদের নিচে নয়, এমন দুজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করাতে বলেছেন আদালত। আর এ বিস্ফোরণের পর ঢাকা ওয়াসা ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানিয়ে আলাদা দুটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ দুটি প্রতিবেদনও ৬০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১১ নভেম্বর দিন রেখেছেন।


এর আগে গত ১ মে ধূপখোলা বাজারে রাস্তার গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হন। পরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ধূপখোলা বাজারে ওয়াসার ঠিকাদারের পানির পাইপ স্থাপনের সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিতাস গ্যাসের জরুরি দল ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতের কাজ করছে।


মেহেদি হাসান শাওন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিস্ফোরণে শাওনের শরীরের ৩০ ভাগ দগ্ধ ছিল বলে জানায় চিকিৎসকরা। গত ৬ মে সকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে গত সপ্তাহে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শাওনের বাবা আব্দুল লতিফ।


বিবার্তা/এহসান/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com