দেশের শিক্ষার্থীদের ইউরোপের তরুণদের সাথে প্রতিযোগিতা করার মানসিকতা গড়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেছেন, শিক্ষার্থীরা সারা পৃথিবীর নাগরিক। আগামীর পৃথিবীতে তোমার সমান বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ইউরোপে পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশে যে তরুণ তৈরি হচ্ছে তোমার প্রতিযোগিতা হবে তার সঙ্গে।
৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে নাজিরহাট কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণির নবীনবরণ অনুষ্ঠান-২০২৩ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
তিনি বলে, টিকে থাকতে হলে শুধু বাংলাদেশে তোমার পাশে বসা বন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বী হবে তা নয়। তোমার বয়সে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যে তরুণ তৈরি হচ্ছে, তার সঙ্গে তোমার প্রতিযোগিতা হবে। যেখানে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, আমরা সকল সম্ভাবনার অংশীদারিত্ব চাইবো। পৃথিবীর শুভ যেমন আঁকড়ে ধরবো। অশুভকে এড়িয়ে চলার সুযোগ আমাদের নেই। সেকারণেই প্রস্তুতি নিতে হবে সঠিকভাবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরও বলেন, সারাদেশের কলেজে ঘুরে ঘুরে দেখি আমার শিক্ষার্থীদের কী হাল। তাদের কথা শুনি। বাস্তবচিত্র পর্যবেক্ষণ করে যাতে ভালো কিছু করে যেতে পারি-সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি অহর্নিশ। কোনো মতেই এতো বড় একটি প্রতিষ্ঠান, যেটা মানচিত্রসম। সারা দেশজুড়ে যার বিস্তৃতি, সেটিকে এককভাবে অথবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে পরিচালন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানসম। এটি পরিচালনায় সকলের অভিভাবকত্ব, অংশীদারিত্ব ও নেতৃত্ব প্রয়োজন।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, কোভিডের সময়ে আমরা দেখেছি বিশ^ব্যাপী কী সংকট গেছে। আমরা তো ভেবেছিলাম পৃথিবীর মানুষ আর কোনোদিন অশুভ কোনো কিছুকে আর ডাকবে না। অমানবিক হবে না। কিন্তু আমরা দেখছি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করছে। বাংলাদেশে এর চাপ পড়ছে। শ্রীলংকা দেউলিয়া হয়েছে। আমরা এই পৃথিবী চাই না। রাশিয়া-ইউক্রেন যখন যুদ্ধ করে বাংলাদেশ তখন লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়। সেটিই বাংলাদেশের গৌরব। টিকে থাকার মূলমন্ত্র। এই যে মানবিকতাবোধ সেটিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে মানবতাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরাই পৃথিবীর আগামী দিনের সৃজনশীলতা, মানবিকতা এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার প্রধান কারিগর হব।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, আমরা সবাই মিলে যদি সচেষ্ট হয়ে কাজ করি তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত অনন্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো। আজকে যারা কলেজে নতুন যাত্রায় শিক্ষাব্রতে এগিয়ে যাচ্ছ, তোমাদের হাত ধরে সেই স্মার্ট বাংলাদেশটি তৈরি হবে। যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা, সংস্কৃতির তদ্রুপ বিকাশ হবে, যেন বিশ্ব অবাক বিস্ময় তাকিয়ে দেখে মুগ্ধ হয়। আসুন এই পবিত্র দেশটাকে গড়ে তুলি। তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিজেকে তৈরি করা। এই পথচলায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় পাশে থাকবে।
নাজিরহাট কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মাহমুদ সালাহ্উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম, গভর্নিং বডির সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইদ্রিচ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোলাম কিবরিয়া, উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও অধ্যাপক কে এম মহিউদ্দীন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ শোয়াইবুল আলম, মো. আজিজ রায়হান, সামিয়া আলম ও জুবাইদুল আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক মো. শাহ জামান সরকার, অধ্যাপিকা মোসফেকা চৌধুরী ও অধ্যাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দীন। অনুষ্ঠানে কলেজ সাংস্কৃতিক ফোরামের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
বিবার্তা/রাসেল/জামাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]