নবীনগরে
৩ মাসেও উদঘাটন হয়নি জুঁই মৃত্যুর রহস্য
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:২১
৩ মাসেও উদঘাটন হয়নি জুঁই মৃত্যুর রহস্য
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের লাউর ফতেহপুর উত্তর পাড়ার সরকার বাড়ির ফারজানা আক্তার জুঁই মৃত্যুর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়নি রহস্য উদঘাটন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর জুঁই নিখোঁজের ঘটনায় নবীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন মৃতের রাজমিস্ত্রী বাবা আবুল হাসনাত রানা। পরের দিন কচুরিপানা ভর্তি পাশের বাড়ির পুকুর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।


মৃতদেহ উদ্ধারের পর জিনে নিয়ে হত্যা করেছে বলে এলাকায় হুজুগ উঠলেও ময়নাতদন্তে উঠে আসে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়েছে। এতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। আসামি শনাক্ত না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ৩ ভাইয়ের মধ্যে ১ বোনকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ গোটা পরিবার। সদ্য এইচএসসি পাশ করা মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল তাদের।


জুঁইয়ের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের অভিযোগ মালয়েশিয়া প্রবাসী প্রতিবেশী বকুল খন্দকারের ছেলে সুজন মিয়া, মৃত জজ মিয়ার ছেলে অলি মিয়া ও একিই গ্রামের ভাগ্নে হিসেবে পরিচিত জায়েদা বেগমের ছেলে অটোরিক্সা চালক মামুন মিয়ার প্রতি। এদিকে প্রবাস থেকে ছুটিতে আসা সুজন মিয়া গত ২২ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন।


পরিবারের সূত্রে জানা যায়, জুঁই নিখোঁজ হওয়ার রাতে হাঁস পার্টি করেন প্রতিবেশী সুজন মিয়া, অলি মিয়া ও মামুন মিয়াসহ তার বন্ধুরা। তাদের হাঁস পার্টির ভিডিও দেখিয়ে কাঁদছিলেন মৃত জুঁইয়ের মা জেসমিন বেগম।


জুঁইয়ের বাবা আবুল হাসনাত রানা জানান, আমি অতো কিচু বুঝি না। হেরা এলাকার ক্ষমতাশালীরার আত্মীয়। পুলিশ কয়েকদিন আইয়া ক’ আমি কাউরে সনদেহ অইলে ধইরা পুলিশরে খবর দিতাম। আমি সুজন,অলি, মামুনের কতা কইচি হেরারে ধইরা জিগাইতো।


জুঁইয়ের মা জেসমিন বেগম জানান, আমার মাইয়া সুজনের ছোডু মাইয়ারে পড়াইত। মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগে মন খারাপ কইরা থাকতো। আমি কইতাম কিরে পড়াইতি যাস না ক্যারে? হে কইত, আমি আর পড়াইতাম না। সুজন ভাই কুপ্রস্তাব দে। আমি আরো মাইয়ারে দমকাইছি।


পলশা মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, সুজন, অলি, মামুন হেরা নেশাখোর। জুঁই নিখোঁজের দিন হেরা হাঁস পাটি দিচে। সহালে যহন সবাই জুঁইরে খুঁজাখুঁজি করতাছে তহন সুজনরা ঘর থেইক্কা কেও হারাদিন বাইর অইচে না। সুজনের মা ক’ সুজন নাকি টেনশনে হারা রাইত ঘুমাচে না। জুঁই নিখো্জের খবর ছড়ছে সহালে, হে ক্যারে হারা রাইত ঘুমাইচে না!


আমির হোসেনের স্ত্রী নিপা জানান, সুজনরা ঘরের লগের পুষ্কুরনিত সুজনের চাচাতো ভাই মনির ফেনা (কচুরিপানা) ভাঙ্গত গিয়া জুঁইয়ের লাশ পাইয়া খবর দিচে ফরে লাশ তুলচে।


সফিকুল মিয়ার স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, জুঁইয়ের মতো ইমুন ভালা মাইয়া আছিল না। জুঁই সুজনের মাইয়ারে পড়াইত। সবাই হেরারে অই সনদেহ করে।


লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, জুঁইয়ের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী। আমরা চাই দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উম্মোচন হউক।


নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, আমি সদ্য এ থানায় জয়েন করেছি। এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্বে থাকা আইও বিস্তারিত বলতে পারবেন।


তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তদন্তের স্বার্থে এখন কোন কিছু বলা যাবে না।


বিবার্তা/আকঞ্জি/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com