
শরৎ শেষে হেমন্তের মিষ্টি রোদে সোনালি ধানে ভরে উঠেছে টাঙ্গাইলের মাঠঘাট। চারদিকে এখন শুধুই ধান কাটার ব্যস্ততা। ভোরের কুয়াশা কাটতে না কাটতেই হাতে কাঁচি নিয়ে কৃষকরা ছুটে যাচ্ছেন মাঠে। কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন—এ যেন গ্রামীণ জীবনের এক পরিচিত উৎসবমুখর দৃশ্য।
সরেজমিনে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের করটিয়াপাড়া চতলবাইদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা হাসিমুখে মাঠে ধান কাটছেন। কথা হয় স্থানীয় কৃষক রিপন মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, এবছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম বন্যা বা পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিল না বললেই চলে। ফলে পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে মুখে হাসি ফুটেছে কৃষকদের।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকের মজুরি কিছুটা বেড়ে গেলেও ভালো ফলন পেয়েছি। প্রতি বিঘায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। এখন বাজারে প্রতি মণ ধান ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।
অন্যদিকে, নতুন ধান ঘরে তোলার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি। নতুন ধানে পিঠা, পায়েস, মুড়ি, মোয়া—বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরির ধুম লেগেছে গ্রামজুড়ে। বাড়িতে-বাড়িতে চলছে অতিথি আপ্যায়নের আয়োজন, মেয়ের জামাই থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন—সবাই আমন্ত্রিত হচ্ছেন এই উৎসবে।
স্থানীয় কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি এবছর ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। সাম্প্রতিক অসময়ের বৃষ্টিতে কিছু ধান শুয়ে পড়লেও উৎপাদন নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট। শ্রমিকের খরচ কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পেরে মনটা ভরে গেছে, বলেন তিনি।
আরেক কৃষক জব্বার জানান, ইরি ধান চাষ করেই তারা সারাবছরের খাদ্য চাহিদা মেটান। তবে আমন ধান ঘরে তোলা মানেই তাদের জন্য উৎসবের সময়। আমন ধান আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ। এই ধান দিয়েই আমরা নবান্নের পিঠা-পায়েস তৈরি করি বলেন তিনি হাসিমুখে।
এদিকে, এ বছর জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ও উৎপাদন সম্পর্কে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিবার্তা/বাবু /এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]