
লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও নীলফামারীর তিস্তাপারে পানি কমলেও জনজীবনে দুর্ভোগ থামেনি। কোথাও ডুবে আছে আমনের ক্ষেত, কোথাও সড়ক ভেঙে বিচ্ছিন্ন গ্রাম। অনেকের ঘরে এখনও হাঁটু পানি, বাঁধের ওপর পলিথিন মোড়ানো ঘরে রাত কাটাচ্ছেন তারা।
রোববার রাতের প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে এক রাতে তিস্তায় পানি বিপৎসীমা ছুঁয়ে যায়। ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা (৫২.১৫ মিটার) পেরিয়ে ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে পানি। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটের সব খুলে দেওয়া হয়। ফলে ভাটির তিন জেলা প্লাবিত হয় এবং অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এখন পানি নেমেছে, কিন্তু আটকে পড়া পানি জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের হাজিরপাড়া, নরশিং ও তালপট্টি চরে এখনও বন্যার পানি আটকা। ভাঙা সড়কে স্থানীয়দের চলাচল বন্ধ। ডুবে আছে অন্তত ১০০ একর জমির আমনের ক্ষেত। স্থানীয় কৃষক নয়া মিয়া বলেন, চারা তলিয়ে গেছে। পানি না নামলে আর চাষ করা যাবে না।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মৃধা বলেন, মর্ণেয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কিছু ঘরবাড়ি ভেঙেছে। রাস্তা নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, আরও দেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, কিছু আমন ক্ষেত ডুবেছে। তবে বড় ক্ষতি হয়নি।
লালমনিরহাটেও একই চিত্র। পাটগ্রামে তিস্তা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানির তোড়ে গ্রামীণ সড়ক ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক ও দুটি কালভার্ট ভেঙেছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আলম জানান, জেলায় প্রায় দেড় হাজার মিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরেফিন জানান, বন্যায় ৯০০ হেক্টরের বেশি জমি তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বেশির ভাগ জায়গা শুকিয়ে গেছে। সবজি আবাদে কিছু ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে শুকনো খাবার ও ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পাটগ্রাম উপজেলায় ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাটেও একই চিত্র। পাটগ্রামে তিস্তা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানির তোড়ে গ্রামীণ সড়ক ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক ও দুটি কালভার্ট ভেঙেছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আলম জানান, জেলায় প্রায় দেড় হাজার মিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরেফিন জানান, বন্যায় ৯০০ হেক্টরের বেশি জমি তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বেশির ভাগ জায়গা শুকিয়ে গেছে। সবজি আবাদে কিছু ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে শুকনো খাবার ও ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পাটগ্রাম উপজেলায় ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামেও বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। তবে তিস্তার ভাঙন শুরু হয়েছে চর যাত্রাপুর এলাকায়। জেলা কৃষি দপ্তরের হিসাবে, ১ হাজার ৭৮৬ হেক্টর রোপা আমনসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের দুইটি গ্রামীণ সড়ক এখনও পানির নিচে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি কমেছে। উজানে বৃষ্টি না থাকায় ফের পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই।
তবে ভাটির দিকে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি দ্রুত বাড়ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি প্রতি ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। কাজীপুর পয়েন্টে ৭৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৯৪ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। হার্ডপয়েন্ট এলাকায়ও পানি ৬৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, রোববার থেকে পানি বাড়ছে। আরও ১-২ দিন বাড়তে পারে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পথে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গা এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশালের দু-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি থাকবে। এরপর বৃষ্টি কমবে।
আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, আগামী সপ্তাহে মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি বিদায় নেবে। ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা নেই।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]