
সামাজিক মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে কুমিল্লার হোমনায় চারটি মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
১৮ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার হোমনার আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেন ‘এ ঘটনায় উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘বেমজা মহসিন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত বুধবার সকালে এক যুবক ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় কিছু লোক ক্ষুব্ধ হয়ে থানার সামনে জড়ো হয়ে ওই যুবকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের শান্ত করেন। দুপুরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় 'বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা' হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ফেসবুকে ওই পোস্টকে কেন্দ্র আজ সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে চারটি মাজারেই আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষ্যেমালিকা চাকমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউএনও ক্ষ্যেমালিকা চাকমা বলেন, 'গত বুধবার ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কারণে জনতার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।'
উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা ও ইসলামী যুব সেনার নেতা শরিফুল জানান, গ্রেপ্তার ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। তার শাস্তি দাবি করেন তারা।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, 'ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তবু সকালে বিক্ষুব্ধ লোকজন মাজারে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।'
ঘটনাস্থল থেকে ফিরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা ঘটনার উসকানি দিয়ে মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]