শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ কোটি টাকা মাল্টা বিক্রির প্রত্যাশা
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৫৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ কোটি টাকা মাল্টা বিক্রির প্রত্যাশা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রসালো ফল মাল্টা। খেতেও যেমন সুস্বাদু। তেমনি রয়েছে এর অনেক উপকারিতা। শরীরের বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে রক্ষা করে ভিটামিন সি জাতীয় এই ফলটি। এক সময় দেশের বাইরে থেকে মাল্টার আমদানি করা হয়ে থাকলেও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই মাল্টার চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনুকুল আবহাওয়া ও মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়াই মাল্টা আবাদের পরিমান বাড়ছে।


শুধু তাই নয় বিভিন্ন পতিত জমিও মাল্টা চাষের আওতায় এসেছে। এ দিকে গুনগত মান ভাল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এখান থেকে মাল্টা ক্রয় করার জন্য এসে থাকেন।


অন্যান্য বছর ন্যায় এবারও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর, কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় মাল্টার আবাদ করা হয়। প্রতিটি গাছেই মাল্টা ফল যেন ঝাঁকে ঝাঁক বেঁধে ধরেছে। তবে এবার আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়াই আকারে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। ইতিমধ্যে মাল্টা ফল চাষ অনেকেই লাভবান হচ্ছে। এ দিকে লাভজনক হওয়াই নতুন নতুন চাষিরা মাল্টা আবাদে ঝুকছে।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে জেলায় মাল্টার আবাদ শুরু হয়েছে। প্রতিবছর এর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার ১৩৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় সাড়ে তিন হেক্টর বেশী। ১৮৮০টির মত ছোট বড় বাগান রয়েছে।


সরেজমিন বাগান ঘুরে দেখা মিলে, দুই কানি জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা সোহাগ ভূইয়ার মাল্টা বাগান। এ বাগানে ১৬০টির মত মাল্টা গাছ রয়েছে। যার প্রতিটি শাখায় থুকে থুকে ধরে আছে মাল্টা।অধিক ফলনের কারনে মাল্টা ফলগুলো গাছ থেকেই মাটিতে নুইয়ে পড়ছে। গারো সবুজের মাঝে হালকা হলদেটে ভাব। যেন স্বাদের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে।


কথা হয় বাগান মালিক সোহাগ ভূইয়ার সাথে। তিনি বলেন, প্রথমে ৬০টি মাল্টা চারা গাছ দিয়ে শুরু করেছি। এখন আমার ব্গানে ১৬০ টি মাল্টা গাছ রয়েছে। পাঁচবছর হল গাছের বয়স। সবগুলোতে পরিপূর্ণ ভাবে ফলন ধরেছে। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। আশা করি ভাল দাম পাব।


আব্দুল আলীম নামে মাল্টা বাগানী বলেন, আমার বাগানে ১৩০টি মত মাল্টা গাছ রয়েছে। পরিচর্যা করতে আমার ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারব আশা করি।


মাল্টা বাগানী জহির মিয়া বলেন, গত বছর তুলনায় এবার আমার বাগানে ফলন ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যে পাইকাররা দেশের বিভিন্ন স্থান আসতে শুরু করেছে। এছাড়াও অনেকে শখের বসে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে মাল্টা কিনছেন।


হাফিজুর রহমান নামে এক বাগানী বলেন, আমার বাগানে ১০০ গাছ রয়েছে। বারি মাল্টা ১ জাত বেশী। আমার নতুন বাগান। গ্রামের অন্যান্য কৃষকদের দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। বাগান করতে দুই লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে। স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তা গাছগুলো রোপণ করেছি। ফলন আসলে লাভবান হব।


বিজয়নগর উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রুহল আমিন খান বলেন, মাল্টা আসার পর থেকে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। জৈবিক পদ্ধতির দিকে অগ্রসর করাচ্ছি।


জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, এ বছর ২৭০০ মেট্রিকটন মাল্টার আবাদ হয়েছে। যা বাজার মূল্য ২৭ কোটি টাকা হবে। আমরা প্রতিনিয়ত কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মনিটরিং করছি। মাল্টা চাষ জনপ্রিয় করে তুলতে আমরা বিভিন্ন সময় প্রদর্শনী করে থাকি এতে করে মাল্টার আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।


বিবার্তা/আকঞ্জি/ ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com