শিরোনাম
এনজিওর ঋণ পরিশোধের পরও মামলায় জেলে মা, কাঁদছে দুধের শিশু
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২১, ২১:৫৫
এনজিওর ঋণ পরিশোধের পরও মামলায় জেলে মা, কাঁদছে দুধের শিশু
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাজীপুরের শ্রীপুরের বারতোপা বাজারের একটি কাপড়ের দোকানি নুরুল আমীন। তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন স্বামীকে সহায়তার জন্য ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামে একটি এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ নিয়েছিলেন। যা মেয়াদান্তে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল।


শাহনাজ পারভীন ঋণের সমস্ত টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন স্বামীর ব্যবসায়। প্রতি মাসে ৯ হাজার ৫০০ টাকা করে কিস্তিও পরিশোধ করতেন নিয়মিত। এক সময় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় দুটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন। পরে এনজিওকর্মীর পীড়াপীড়িতে দুই মাস পরই দুটি কিস্তি দিয়ে ঋণ পরিশোধ করেন শাহনাজ। তবুও এনজিওর মামলার ফাঁদে আটকে গেছেন তিনি।


সোমবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ছয় মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশুকে রেখে পরোয়ানা মূলে শাহনাজ পারভীনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। এরপর থেকেই মায়ের জন্য কাঁদছে শিশুটি।


শাহনাজের স্বামী নুরুল আমীন বলেন, আমরা ঋণ গ্রহণ করে পরে দুটি কিস্তি পরিশোধ করতে কিছুটা সময় লাগে। দুই মাস পরই ঋণের টাকা পরিশোধ করি। এ সময় এনজিও আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নও দেয়। যদিও পরে তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করেন। এ মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ করে আজ শ্রীপুর থানা পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেছে।


তিনি আরো বলেন, সমস্যা হয়েছে আমার ছয় মাসের শিশু ফাতেমার জন্য। সে এখনও তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই মায়ের জন্য সে কান্নাকাটি করছে। করোনার মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে পড়বো ভাবতেই পারিনি।


এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার বলেন, এনজিওর মামলায় আদালতের পরোয়ানা মূলে ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে।


এ বিষয়ে টিএমএসএসের শ্রীপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, শাহনাজ পারভীন নামে বর্তমানে আমাদের কোনো সদস্য নেই, তবে আগে ছিল। তখন আমি এ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলাম না। তার কাছে আমাদের কোনো দেনা পাওনা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে কেন মামলা হলো তা আমি বলতে পারব না। আমার আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন বিষয়টি তার জানা থাকতে পারে।


টিএমএসএসের গাজীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান বলেন, মামলা ও নারীকে গ্রেফতারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। জরুরিভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধের পরও মামলা ও দুগ্ধপোষ্য শিশু রেখে একজন নারীকে গ্রেফতার সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিবার্তা/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com